গুম হওয়া সন্তানের জন্য প্রতীক্ষার প্রহর গুনছেন যুবদল নেতা রিপনের মা রওশন আরা বেগম। ২০১৪ সালের ২১ মার্চ গুম হন তিনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে ভোর রাতে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় রিপনকে। সেই থেকে আজ সাড়ে দশ বছর পর্যন্ত ছেলে ফিরে আসার প্রহর গুনছেন মা।
মাহবুবুর রহমান রিপন ফেনী পৌর যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি দাগনভূঞা উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের শরীফপুর গ্রামে। তিনি ফেনী শহরের পাঠানবাড়ি রোডের মমিন জাহান মসজিদ সংলগ্ন গিয়াস উদ্দিনের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন।
রিপনের চাচা ওহিদুর রহমান বলেন, ভাইপোকে তুলে নেওয়ার পর অনেক জায়গায় সন্ধান করেও পাইনি।
রিপনের ভাই শিপু বলেন, যুবদলের রাজনীতি করাই ছিল আমার ভাইয়ের অপরাধ। তাকে অনেকভাবে নিবৃত্ত করা চেষ্টা করে বিগত স্বৈরাচার সরকার। না পেরে শেষে গুম করে।
রিপনের মা রওশন আরা বেগম বলেন, ঐ দিন আমার ছেলেকে সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিচয়ে দরজা ভেঙে টেনেহিঁচড়ে মাইক্রোতে তুলে নিয়ে যায়। পরে অনেক সন্ধান করেছি ছেলের। কোথাও পাইনি। আমি জানি না, আমার ছেলে বেঁচে আছে না মারা গেছে। আমি এখনো প্রতীক্ষায় আছি, আমার ছেলে ফিরবে।
জেলা যুবদলের তৎকালীন সভাপতি ও বর্তমান জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী হাবিবুল্লাহ মানিক জানান, রিপন যুবদলের ত্যাগী ও দক্ষ সংগঠক ছিল। ফ্যাসিস্ট সরকার রাতের আঁধারে তাকে তুলে নিয়েছে। এ গুমের সঙ্গে জড়িত সবাইকে বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।
জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন খান কালবেলাকে জানান, রিপন যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। তার গুমের পর আমরা বিএনপি ও যুবদলের পক্ষ থেকে সভা-সমাবেশ করেছি। তার স্ত্রী বাদী হয়ে একটি মামলা করেছিলেন। পরবর্তীতে পুলিশ কোনো তদন্ত ছাড়া একতরফা একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছে। এখন তার পরিবারের পক্ষ থেকে যদি মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করতে চায় তাহলে পাবলিক প্রসিকিউটর হিসেবে এ ক্ষেত্রে আইনি সহায়তা প্রদান করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফেনীর পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান কালবেলাকে বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন