রাজশাহীর তানোরে বাসচালক-হেলপারদের মারধরের ঘটনার জেরে সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ডে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে বাস শ্রমিকদের বিরুদ্ধে। এ সময় তারা অর্ধশতাধিক সিএনজি অটোরিকশার সামনের কাচ ভেঙে দিয়েছে। এতে অটোরিকশা চালকসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সকালে রাজশাহী নগরীর রেলগেট এলাকার সিএনজি স্ট্যান্ডে এ ঘটনা ঘটে। নগরের বোয়ালিয়া থানার ওসি মেহেদী মাসুদ বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে সোমবার সকালে জেলার তানোর উপজেলা সদরে সিএনজি অটোরিকশা চালকরা বাসের চালক, হেলপার ও কন্টাক্টরসহ ৬ জনকে আহত করেন।
এর জেরে ওই দিন দুপুরে রাজশাহী থেকে সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। সোমবার রাত ৮টা পর্যন্ত বাস চলাচল বন্ধ থাকে। এরপর রাতে আবারও বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে মঙ্গলবার ভোর ৪টা থেকে ঢাকাসহ সব রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দেযন বাস শ্রমিকরা। তবে দুপুর থেকে সব রুটের বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে বলে মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
রাজশাহী মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পাখি বলেন, সোমবার সিএনজি চালকরা আমাদের ৬ শ্রমিককে মেরে গুরুতর আহত করেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে আমরা কিছুক্ষণ বাস চলাচল বন্ধ করে রেখেছিলাম। তবে মঙ্গলবার দুপুর থেকে বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।রেলগেটে সিএনজি চালকরা রাস্তা ব্লক করে রেখেছিল। ফলে রাজশাহী-তানোর রুটে বাস চলাচলে কিছুটা ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছিল। তবে বর্তমানে বাস চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সিএনজি অটোরিকশা চালকরা নিজেরাই নিজেদের মধ্যে মারামারি করেছে। সে দায় আমাদের উপর চাপানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। মূলত তাদের মধ্যে ছয় সিট ও দশ সিটের ঘটনা নিয়ে নিজেরাই মারামারি করেছে। আমাদের কোনো শ্রমিক সেখানে যায়নি।
নগরের বোয়ালিয়া থানার ওসি মেহেদী মাসুদ বলেন, আমরা এসে ভাঙচুর করা ৩২টি গাড়ি পেয়েছি। অন্য গাড়িগুলো চলে গেছে। ভাঙচুর করা গাড়ির সংখ্যা ৭০টি হতে পারে। সব গাড়ির কাচ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এরপর কিছু গাড়ি উল্টে ফেলা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। যাত্রী ও চালক মিলিয়ে ১৫ জনের মতো আহত হতে পারেন। আমরা সিএনজি চালকদের মামলা করতে বলেছি। তারা মামলা দিলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।
অপরদিকে তানোরে বাস শ্রমিকদের মারধরের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। জানতে চাইলে তানোর থানার ওসি মিজানুর রহমান জানান, বাস শ্রমিক ও সিএনজি অটোরিকশার চালকদের সমস্যা পুরোনো। এরা শহরে গেলে তাদের সিএনজি আটকানো হয়। এরা তখন তানোরে বাস চালক-হেলপারদের দাপট দেখায়। এই সমস্যার সমাধান হওয়া উচিত।
তিনি জানান, সোমবার ছয় বাস শ্রমিককে মারধরের ঘটনায় রাতে থানায় একটি মামলা হয়েছে। এতে আসামি হিসেবে ১৮ সিএনজি চালকের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাত আরও আসামি আছে। মামলার পর এজাহারভুক্ত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন