আলুর বাজারে কয়েক দফা মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে চলমান অস্থিরতা ঠেকাতে সম্প্রতি পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে আলুর দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। সেই নির্দেশনা বাস্তবায়নে রাজশাহীর পবার উপজেলায় বিভিন্ন হিমাগারে নির্ধারিত সময়ের পরও মজুতকৃত ১,৯৫৭ বস্তা আলু জব্দ করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ন্যায্যমূল্যে খোলা বাজারে বিক্রি করা হয়েছে।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার আমান ও রহমান কোল্ডস্টোরেজে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালানো হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের এ অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জাহিদ হাসান। এতে পবা থানা পুলিশ সহযোগিতা করেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের তথ্য সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার আমান কোল্ডস্টোরেজে ৪৫২ বস্তা ও রহমান কোল্ডস্টোরেজে ১,৫০৫ বস্তা আলু ন্যায্যমূল্যে বিক্রির জন্য জব্দ করা হয়েছে। উপস্থিত ক্রেতাদের উপস্থিতিতে খোলা বাজারে ডাকের মাধ্যমে প্রতি কেজি আলু ৩৯ টাকা পাইকারি দরে বিক্রি করা হয়। যা ভোক্তাদের মাঝে খুচরা দরে প্রতি কেজি আলু ৪৫ টাকা দরে বিক্রি করা হবে।
আরও জানা গেছে, হিমাগারে অভিযান চালিয়ে মজুতকৃত আলু বাজারে ছেড়ে দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কারণ আলুর মূল্যবৃদ্ধি ও অতীব প্রয়োজনীয় এবং বহুল ব্যবহৃত এ সবজির চড়া দামে বিক্রি হওয়ায় ক্রেতা সাধারণের নাভিশ্বাস উঠতে চলেছে। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন জেলায় আলুর মজুত রয়েছে এমন হিমাগারের বিভাগ ও জেলা ভিত্তিক তালিকা, অধিক মুনাফাখোর মজুতদারদের তালিকা ও হিমাগারে সংরক্ষিত আলুর তথ্য সরবরাহ করা হয়। অসাধু ব্যবসায়ীরা হিমাগার কেন্দ্রিক কূটকৌশলের মাধ্যমে আলুর বাজার নিয়ন্ত্রণ করে ভোক্তা সাধারণকে জিম্মি করে ফেলেছে।
গত ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত মজুতদারেরা আলু সংগ্রহ করে হিমাগারে রেখেছেন। ওই সময় তাদের আলুর ক্রয়মূল্য কেজি প্রতি ছিল ১৮ থেকে ২০ টাকা। কোল্ড স্টোরেজে রাখার খরচ ৬০ কেজির বস্তাপ্রতি অঞ্চলভেদে ১৮০ টাকা থেকে ৩৪০ টাকা। তবে কিছু মজুতদার, বেপারি, ফড়িয়া (অধিকাংশ ব্যবসায়ী ট্রেড লাইসেন্সবিহীন) এবং সংশ্লিষ্ট হিমাগারের ম্যানেজার/মালিক যোগসাজশে অস্বাভাবিক ও অযৌক্তিকভাবে মূল্য বাড়িয়ে দেয়। আড়তদারদের নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ভোক্তা সাধারণকে জিম্মি করে প্রতি কেজি আলু খুচরা পর্যায়ে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা দরে বিক্রি করছে। শুধু রাজশাহী জেলাতেই ৪৩ টি কোল্ডস্টোরেজ আছে। এতে সংরক্ষণ বা মজুত করা হয় প্রায় ৮৫ লাখ ব্যাগ বা বস্তা। আর প্রতি বস্তায় ৬৫ কেজি আলু থাকে।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাহিদ হাসান বলেন, ‘হিমাগরে নির্ধারিত সময়ের পরেও আলু অবৈধভাবে মজুদ করে রাখা হয়েছিল। এর ফলে বাজারে আলুর দাম নিয়ে অস্থিরতা তৈরি হয়। বাজারে আলুর দামের অস্থিরতা কমাতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।’
মন্তব্য করুন