যাচাইবাছাই না করেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছবি শেয়ার করে তোপের মুখে পড়েছেন বাংলাদেশের বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে একটি ছবি পোস্ট করেন তসলিমা নাসরিন। ক্যাপশনে তিনি লেখেন, ‘বাংলাদেশি জিহাদিরা এখন মারণাস্ত্র হাতে নিয়েই তাদের মিছিল মিটিংয়ে যাচ্ছে। ইউনূস-আসিফ গ্যাং কী জিহাদিদের নিরস্ত্রীকরণের কথা একবারও ভাববে? মনে হয় না।’
তসলিমা নাসরিনের এই পোস্টকে উদ্ধৃত করে পশ্চিমবঙ্গের কয়েকটি সংবাদমাধ্যম সংবাদ প্রকাশ করেছে। তারা এই ছবির সত্যতা যাচাইবাছাই না করেই তাদের প্রতিবেদনে অতিরঞ্জিত ও বানোয়াট তথ্য দিয়েছে। বাংলাদেশকে জঙ্গি রাষ্ট্র বানানোর জন্য অপতথ্যও তুলে ধরেছে তারা। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের ভূমিকা নিয়েও আপত্তিকর মন্তব্য করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
পশ্চিম বাংলার টিভি নাইন বাংলা শিরোনাম করেছে, ‘জঙ্গিদের হাতে চলে গিয়েছে বাংলাদেশ? বুকে ভয় ধরাচ্ছে তসলিমার পোস্ট।’
প্রতিবেদনটিতে টিভি নাইন উল্লেখ করেছে, ‘ভয়ংকর ছবি ওপার বাংলার। জঙ্গিদের কবলে যাচ্ছে বাংলাদেশ? আর কোনো রাখঢাক নয়। প্রকাশ্যেই এবার অস্ত্র নিয়ে দাপাদাপি। সেই ছবি পোস্ট করলেন বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন। প্রশ্ন তুললেন ইউনূস সরকারের ভূমিকা নিয়ে।’
জানা গেছে, ভিডিওতে দৃশ্যমান অস্ত্রটি মারণাস্ত্র ছিল না। বরং এটি একটি খেলনা বন্দুক, যা সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর পুলিশ গতকাল শনিবার ওই ব্যক্তির কাছ থেকে উদ্ধার করেছে।
শাহজাদপুর থানার ওসি আসলাম ইসলাম কালবেলাকে বলেন, ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানোর পর তদন্তে নামে পুলিশ। পরে ওই যুবকটিকে খুঁজে বের করা হয়। তার কাছ থেকে যে বন্দুকটি উদ্ধার করা হয়েছে, সেটি একটি সাধারণ খেলনা বন্দুক।
তিনি বলেন, এখানে যে মেলা লেগেছিল সেখান থেকে ওই যুবক তার বোনের জন্য একটা খেলনা বন্দুক ক্রয় করে। অতিথিদের সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় করার সময় ভিড়ের মধ্যে সে ওই খেলনা বন্দুকটা উপরে তুলে ধরে। এ সময় অনেকেই ওই ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে। এটা কোনো মারণাস্ত্র ছিল না জাস্ট একটা খেলনা বন্দুক।
এ বিষয়ে শাহজাদপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান জানান, ছেলেটির নাম নাইমুল ইসলাম (২২) এবং বাবার নাম ইউসুফ আলি। নাইমুল স্থানীয় বেলতৈল গ্রামের বাসিন্দা।
তিনি বলেন, আমি ওকে গতকাল ডেকে আড়াই ঘণ্টার মতো কথা বলেছি। সে জানিয়েছে আওলাদে রাসুলের আগমন উপলক্ষে তার বন্ধু ছাত্রদের সঙ্গে তাকে অভ্যর্থনা জানাতে যায়। এর কিছুক্ষণ আগে মাহফিল উপলক্ষে আয়োজিত মেলা থেকে তার ছোট বোনের জন্য একটি খেলনা বন্দুক কিনেছিল সে। শায়েখ নাসির বিল্লাহ এসে পৌঁছানোর পর তার সঙ্গে হাত মেলানোর জন্য কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করে নাইমুল। সেই মুহূর্তে ভিড়ের চাপে ঘটনাস্থলে ধাক্কাধাক্কি শুরু হলে প্লাস্টিকের বন্দুকটি ভেঙে যেতে পারে এমন আশঙ্কায় সেটিকে এক হাত দিয়ে উপরে তুলে রাখে সে। তখন সাংবাদিকদের ভিডিওতে এটি রেকর্ড হয়।
মন্তব্য করুন