চার মাস পর সিলেটের বিশ্বনাথে ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামান লিলু হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের স্বীকারোক্তি দিয়েছেন গ্রেপ্তার হওয়া ভাড়াটে খুনি মাহবুবুর রহমান (২৮)।
তিনি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ধোপাকলা গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে। বুধবার (১১ ডিসেম্বর) আদালতে আসামি হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে। বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন আগে একটি হত্যা মামলার সাক্ষী ও নওধার গ্রামের ফটিক ডাকাত ক্রসফায়ারে নিহত হওয়ায় ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয় তার পরিবার। ২০২১ সালে মাহবুবুর রহমান ছিনতাই মামলায় সুনামগঞ্জ কারাগারে গেলে পরিচয় হয় ফটিক ডাকাতের ভাই আকলু ডাকাতের সঙ্গে। ওই সময় ব্যবসায়ী লিলুকে হত্যার পরিকল্পনা করে মাহবুবকে ভাড়া করে আকলু ডাকাত। এরপর কারাগার থেকে বের হয়ে মাহবুবুর ব্যবসায়ী লিলুকে হত্যার জন্য সুযোগ খুঁজতে থাকে।
দেশের পট-পরিবর্তনের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে গত ১৪ আগস্ট ব্যবসায়ী লিলুকে সন্ধ্যা রাতে নিজ বাড়ির রাস্তায় কুপিয়ে হত্যা করে। তার সঙ্গে কিলিং মিশনে আরও দুজন সহযোগী ছিল।
আরও জানা গেছে, এ মামলায় প্রথমে ক্রসফায়ারে নিহত ফটিক ডাকাতের চাচাতো ভাই আফজালকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কিন্তু তার কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডের তেমন কোনো তথ্য উদ্ধার করতে পারেনি। ফলে মামলাটি পিবিআইর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছিল। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে গত ৮ ডিসেম্বর খুনি মাহবুবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) মাহবুবুরকে নিয়ে ব্যবসায়ী লিলুর গ্রামের বাড়ি রামপাশা ইউনিয়নের নওধার গ্রামে এসে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা, আসামির জুতা উদ্ধার করে পিবিআইয়ের তদন্তকারী দল।
পিবিআইর তদন্তকারী কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম কালবেলাকে জানান, আসামি মাহবুবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদের পর হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা ও আসামির জুতা উদ্ধার করা হয়। লিলু মিয়াকে হত্যার জন্য আসামি মাহবুবুর রহমানকে ভাড়া করে নিয়ে আসা হয়েছিল। মাহবুবুর বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৪ আগস্ট রাতে এশার নামাজ পড়ে নিজ মসজিদ থেকে বাড়ি ফেরার পথে নওধার গ্রামের ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামান লিলুকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় পরদিন অজ্ঞাত আসামি করে থানায় মামলা করেন তার স্ত্রী।
মন্তব্য করুন