রংপুরের গঙ্গাচড়ায় যৌতুক ছাড়া বিয়ে করায় ১১ নবদম্পতিকে উপহার দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় গঙ্গাচড়া সরকারি মডেল হাইস্কুল মাঠে ব্যতিক্রমধর্মী এ আয়োজন করেছে উপজেলা জামায়াত।
উপহার হিসেবে নবদম্পতিদের দেওয়া হয়েছে খাট, আলমারি, তোষক, কম্বল, স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকাসহ গৃহস্থালিতে ব্যবহৃত নানা আসবাপত্র।
জামায়াত সূত্র জানিয়েছে, উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আর্থিকভাবে অসচ্ছল কন্যাদায়গ্রস্ত পরিবারকে খুঁজে বের করা হয়েছে। ঢাকার একটি অভিজাত কমিউনিটি সেন্টারে তাদের বিয়ের আয়োজন করা হয়। বিয়েতে দুই পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। আয়োজনে সহযোগিতা করেছে একটি আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা।
যৌতুক ছাড়া বিয়ে করেছেন তাদের একজন উপজেলার বড়বিল এলাকার লাইবুল ইসলাম। তিনি বলেন, যৌতুক একটি সামাজিক ব্যাধি। সব সময় চাইতাম যাতে যৌতুক ছাড়া বিয়ে করতে পারি। আল্লাহ এ আশা পূরণ করেছেন। যারা আমাদের সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।
রংপুর নগরীর লোকমান হাকিম ও আরফিনা আক্তার নবদম্পতিও এ উপহার পেয়েছেন। লোকমান হাকিম বলেন, ‘যৌতুক নেওয়া ও দেওয়া ইসলামি শরিয়ায় হারাম। আর একজন মুসলিম হয়ে কেন মানুষের টাকার প্রতি লোভ দেব। এর জন্য আমি আমার সাধ্য অনুযায়ী যৌতুক ছাড়া বিয়ে করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমি আমার মুসলিম ভাইদের উদ্দেশে বলতে চাই, আপনারা বিয়ের সময় শ্বশুর পরিবারের লোকজনকে কষ্ট দিয়ে কিছু নেবেন না। কাউকে কষ্ট দিয়ে কিছু নিয়ে সুখে থাকা যায় না।’
গঙ্গাচড়া উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি নায়েবুজ্জামান নায়েব কালবেলাকে বলেন, সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে আমাদের এ আয়োজন। যারা বিয়ের অনুষ্ঠান করতে অক্ষম তাদের জন্য আমাদের ক্ষুদ্র এ প্রয়াস। এর আগেও বিভিন্ন সময় ১২টি বিয়ের আয়োজন করেছি। সুন্দর সমাজ বিনির্মাণে জামায়াত এমন বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করবে বলেও জানান তিনি।
উপহার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী রংপুর মহানগর শাখার সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক রায়হান সিরাজী। এ সময় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী উপজেলা শাখার আমির মাওলানা নায়েবুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপজেলা নায়েবে আমির তাজউদ্দিন, সেক্রেটারি মাওলানা সাইফুল ইসলাম, গঙ্গাচড়া ইউনিয়ন আমির মনিছুর রহমান, জামায়াত নেতা শরিফুল হুদা দুলাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন