বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ বলেছেন, বর্তমানে সবচেয়ে বড় সংস্কার প্রয়োজন হলো একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আয়োজন করা। অন্তর্বর্তী সরকারের বড় সংস্কার হবে সুষ্ঠু নির্বাচন দেওয়া। বর্তমান সরকার যদি একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে পারে এটাই ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি মতবিনিময়কালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
কাজী কায়কোবাদ বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শত শত শহীদের রক্তের বিনিময়ে আজ আমরা জালিম স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার অত্যাচার থেকে রক্ষা পেয়েছি। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের যারা জীবিত আছেন তাদের হয়তো নানাভাবে সম্মানিত করা যাবে, সুযোগ-সুবিধা দেওয়া যাবে। কিন্তু যারা এ আন্দোলনে শহীদ হলেন তাদের শাহাদাতকে মূল্যায়ন করতে হলে অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত এমন একটি সুন্দর নির্বাচন উপহার দেওয়া। যে নির্বাচন হবে ইতিহাসের সবচেয়ে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ। যে নির্বাচন বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রশংসনীয় হয়ে থাকবে। অন্তর্বর্তী সরকারের সামনে এ সুযোগ এখন অপেক্ষা করছে।
তিনি বলেন, আমি চাই সরকার এমন নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিক। যেখানে আমরা পাঁচজন প্রার্থী থাকলে সবাই যেন মিলেমিশে যার যার নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারি। সবাই সবার প্রতীকে ভোট চাইবে, মিছিল করবে, সমাবেশ করবে কিন্তু কোনো মারধর হবে না। কারো ভোট কেউ জোর করে সিল মারবে না। রাতের আঁধারে ভোট চুরি করবে না। তাহলে অন্তত শহীদদের এ ত্যাগের কিছুটা মূল্যায়ন হবে। একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে আন্দোলনে শহীদদের আত্মার শান্তি হবে। তাদের পরিবার এটা দেখে শান্তি পাবে যে, স্বজনের প্রাণের বিনিময়ে দেশের মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, আপনাদের বক্তব্য অনুযায়ী গত ১৭ বছর আপনারা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা পাননি। নিরপেক্ষ সংবাদ করতে গিয়ে সরকারের রোষানলে পড়েছেন। হামলা-মামলার শিকার হয়েছেন। অনেক সাংবাদিককে নির্মমভাবে হত্যা করেছে সে সরকার। আমি এবং আমার দল ক্ষমতায় থাকাকালীন এ মুরাদনগরে আপনারা নির্ভয়ে নির্বিঘ্নে সাংবাদিকতা করেছেন। ৫ আগস্টের পর থেকে আজও আপনারা স্বাধীন।
তিনি আরও বলেন, আমি অন্যায় করলে আমার বিরুদ্ধে লিখবেন। আমার দলের কেউ অন্যায় করলে তার বিরুদ্ধে লিখবেন। কেউ বাধা দেবে না। তবে মনে রাখতে হবে, আপনাদের সংবাদের কারণে যেন কোনো নিরপরাধ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। কেননা, মিথ্যা বা ভুল সংবাদ কিন্তু কাউকে অ্যাসিড নিক্ষেপের চেয়েও মারাত্মক হয়ে যায়। আপনারা জাতির বিবেক। আল্লাহকে ভয় করুন। নিরপেক্ষ বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করুন।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জনের সভাপতিত্বে ও সাংবাদিক এমকে আই জাবেদের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল উদ্দিন ভুইয়া, আব্দুল আজিজ মোল্লা, নজরুল ইসলাম, সৈয়দ আমজাদ আলী তছু, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সোহেল আহমেদ বাবু, উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুদ রানা, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট নাছির উদ্দীন আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক আহমেদ বাদশাহ এবং উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক খায়রুল আহসান।
মন্তব্য করুন