চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ : ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:২২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

আলিফ হত্যা, জেলা আইনজীবী সমিতির ১১ দফা

সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যরা। ছবি : কালবেলা
সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্যরা। ছবি : কালবেলা

চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ১১টি দাবি উত্থাপন করেছে জেলা আইনজীবী সমিতি। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে চট্টগ্রাম আদালতের আইনজীবী মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি উত্থাপন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. আবদুল কাদের, সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মাহফুজুর রহমান খান, সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. কাশেম কামাল, অর্থ সম্পাদক কাজী মো. আশরাফুল হক আনসারী জুয়েল, পাঠাগার সম্পাদক আহমেদ কবির করিম, সাংস্কৃতিক সম্পাদক মারুফ মো. নাজেবুল আলম, ক্রীড়া সম্পাদক হাবিবুর রহমান, সদস্য শাহ ইমতিয়াজ রেজা চৌধুরী নিশান, মো. শাকিল ও আবদুল্লাহ আল ফাহাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এসময় জেলা আইনজীবী সমিতির পক্ষে ১১ দফা উত্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হলো- হত্যাকাণ্ডে জড়িত যে সকল ইসকনের সন্ত্রাসী এখনও গ্রেপ্তার হয়নি তাদেরকে গ্রেপ্তারপূর্বক দ্রুত বিচার নিষ্পত্তি করে দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের জন্য প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের প্রতি জোর দাবি জানাই। মসজিদ, আইনজীবীদের চেম্বার, গাড়ি ও দোকানপাট ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শান্তি প্রদানের দাবি। সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে হত্যা মামলাসহ অন্যান্য মামলাসমূহে অন্যতম আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। হত্যাকাণ্ডে দায়েরকৃত মামলাসমূহের চার্জশীট প্রদানপূর্বক দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচার নিষ্পত্তির কার্যকর ব্যবস্থা করতে হবে। ঘটনার দিন আদালত এলাকায় নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিষ্ক্রিয়তার বিষয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। শহীদ অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের হত্যাকারীদের পক্ষে কোনো বিজ্ঞ আইনজীবীকে মামলা পরিচালনা না করার জন্য অনুরোধ। নির্মম ও পরিকল্পিত এ হত্যাকাণ্ডটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত না করে সকল প্রকার অপপ্রচার ও চক্রান্ত থেকে বিরত থাকার জন্য দেশি-বিদেশি সকল মহলের প্রতি উদার্ত আহ্বান। শহীদ অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের পরিবারের অর্থনৈতিক ও সামাজিক নিরাপত্তার জন্য রাষ্ট্রের প্রতি জোর দাবি। নিরাপরাধ কোনো ব্যক্তিকে হয়রানি না করার জন্য জোর দাবি। আদালত অঙ্গনের নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য প্রশাসনের নিকট দাবি। আদালত অঙ্গনের সুদীর্ঘকালের সৌহার্দপূর্ণ সম্প্রীতি বজায় রাখা এবং সহঅবস্থান নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি অনুরোধ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডোভোকেট মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন চৌধুরী রাজ্জাক।

তিনি বলেন, আমরা হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই বলে আসছি ওই দিনের ন্যাক্কারজনক এ ঘটনার সময় আদালত এলাকার নিরাপত্তায় নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তায় সন্ত্রাসীরা এমন নির্মম হত্যাকাণ্ড, মসজিদ, আদালত, ল চেম্বার, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থী জনগণের গাড়ি, দোকানপাট ভাঙচুর করার সুযোগ পেয়েছিল। আদালত অঙ্গনে দীর্ঘসময় চিন্ময় দাশকে প্রিজনভ্যানে রাখা হয় এবং তিনি প্রিজনভ্যান থেকে হ্যান্ডমাইক দিয়ে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে তার অনুসারিদের ন্যাক্কারজনক এ ঘটনার নির্দেশ দেন। যার ফলশ্রুতিতে আইনজীবী সমিতির ইতিহাসে এ ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনা সংগঠিত হয়। পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, শহীদ অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের হত্যাকারীদের পক্ষে কোনো বিজ্ঞ আইনজীবীকে মামলা পরিচালনা না করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। নির্মম ও পরিকল্পিত এ হত্যাকাণ্ডটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত না করে সকল প্রকার অপপ্রচার ও চক্রান্ত থেকে বিরত থাকার জন্য দেশি-বিদেশি সকল মহলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। আলিফের পরিবারের অর্থনৈতিক ও সামাজিক নিরাপত্তার জন্য রাষ্ট্রের প্রতি জোর দাবি জানাই। নিরাপরাধ কোনো ব্যক্তিকে হয়রানি না করার জন্য জোর দাবি আমাদের। আদালত অঙ্গনের নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য প্রশাসনের নিকট জোর দাবি করছি। এ ছাড়া আদালত অঙ্গনের সুদীর্ঘকালের সৌহার্দপূর্ণ সম্প্রীতি বজায় রাখা ও সহঅবস্থান নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি অনুরোধ।

এক প্রশ্নের জবাবে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আলিফের হত্যাকারীদের পক্ষে কোনো বিজ্ঞ আইনজীবীকে মামলা পরিচালনা না করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। তবে হত্যা মামলার একটি নিয়ম আছে, হত্যা মামলার কোর্ট যখন চলবে তখন কোর্ট নিজেই একজন আইনজীবী নিয়োগ করবেন আসামিপক্ষে। এটাকে স্টেট ডিফেন্স বলে। আলিফ হত্যা মামলার আসামিদের পক্ষে বাইরের আইনজীবী দাঁড়ালে বাধা দেওয়া হবে না। চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির কেউ আসামিপক্ষে লড়াই করলে তা হবে আলিফের রক্তের সঙ্গে বেঈমানির শামিল। এ ছাড়া কোনো আইনজীবী আদালত চত্বরে হামলা ও গ্রেপ্তারের ভয়ে আসছে পারছেন না এমন কোনো অভিযোগ সমিতিতে করেননি। আদালত চত্বরে ইসকনের তাণ্ডব আমাদের বাকরুদ্ধ করেছে। ইসকন সন্ত্রাসী সংগঠন। ইসকন নিষিদ্ধের বিষয়ে জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ।

মামলায় কয়েকজন আইনজীবী আসামির বিষয়ে তিনি আরও বলেন, কোনো আইনজীবী নিরাপত্তাহীনতায় আছে এমন কোনো অভিযোগ পাইনি। আবার মামলায় আসামি হওয়া অধিকাংশ আইনজীবীই আদালতের কার্যক্রম অংশ গ্রহণ করেছেন। কিন্তু ভারতীয় মিডিয়া মিথ্যা প্রোপ্রাগাণ্ডা চালাচ্ছে। ভারত গত ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রতি একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল। সেটা হারিয়ে যাওয়ায় এখন তারা মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মা-বোন তুলে গালি দিলেই জরিমানা করবে যে গ্রাম

‘ওবায়দুল কাদের মারা গেছে দাবিটি মিথ্যা’

মালদ্বীপে অগ্নিকাণ্ডে তিন মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম বন্ধ

বিয়ের ১২ বছর পূর্তিতে সাকিবকে নিয়ে শিশিরের আবেগঘন বার্তা

ময়মনসিংহে স্বামী-স্ত্রীসহ ৩ জনের মরদেহ উদ্ধার

আরএসএফের প্রতিবেদন / সাংবাদিকদের জন্য বিপজ্জনক বাংলাদেশসহ চার দেশ

বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের শহরে শত শত সেনাসহ জেনারেল আটক

সৌদি আরবে ২০৩৪ বিশ্বকাপকে ‘সর্বকালের সেরা’ বললেন রোনালদো

কনকনে শীতে কাবু কুড়িগ্রামের মানুষ

১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে ২১ বছর পর গ্রেপ্তার

১০

আসছে শৈত্যপ্রবাহ, বাড়বে শীতের তীব্রতা

১১

চিন্ময়ের আইনজীবীকে নিয়ম মেনে আসতে বললেন বিচারক

১২

গাজীপুরে ছুরিকাঘাতে যুবককে হত্যা

১৩

দেশে ফিরেছেন মির্জা ফখরুল

১৪

গুম-খুনের জন্য ক্ষমা চাইলেন র‍্যাবের ডিজি

১৫

৫ আগস্টের পর চাঁদাবাজি-ছিনতাইয়ে র‍্যাবের ১৬ সদস্য আটক : র‍্যাব ডিজি

১৬

র‌্যাবের আয়নাঘর ছিল, তদন্তের স্বার্থে সেভাবেই আছে : ডিজি শহিদুর

১৭

কয়রায় যৌথ অভিযানে পাইপগান উদ্ধার

১৮

পাটুরিয়া-আরিচা ঘাটের ফেরি চলাচল শুরু

১৯

সেন্টমার্টিনের সুরক্ষায় কাজ করবে প্রাণ আরএফএল ও ইউএনডিপি 

২০
X