বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আমরা দেশে জবাবদিহির পরিবেশ তৈরি করতে চাচ্ছি। রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের মূল লক্ষ্য হলো জবাবদিহি।
তিনি বলেন, শুধু প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, এমপিরা জবাবদিহি করবেন? না। প্রতিটা পর্যায়ে জবাবদিহি করতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার যেমন জবাবদিহি করবেন, একজন প্রধানমন্ত্রীও জবাবদিহি করবেন। সরকারি-বেসরকারি খাতের প্রতিটি পর্যায়ে জবাবদিহি করতে হবে। প্রতিটি জায়গায় জবাবদিহির পরিবেশ তৈরি করতে হবে, যা এর আগে ছিল না দেশে।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’-বিষয়ক বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনী অধিবেশনে তিনি ভার্চুয়ালি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, আপনারা দেখেছেন ২০১৪ সাল, ২০১৮ সাল ও ২০২৪ সাল তথাকথিত নির্বাচন। আপনার আরও দেখেছেন এই ফরিদপুরে সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা কীভাবে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। দেশে যদি জবাবদিহির জায়গা থাকত, তাহলে কী এই দুই হাজার কোটি টাকা পাচার করতে পারত? কখনোই না।
তিনি বলেন, দেশের অধিকার প্রতিষ্ঠাতা করতে হলে সবাইকে নিয়েই কাজ করতে হবে। আর এ জন্যই আমরা ৩১ দফার কথা বলছি।
‘জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ করলেই জনগণের মাঝে আস্থা ফিরে আসবে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণের সমর্থন আমাদের পক্ষে রাখতে হবে। কিছু মানুষ ভাবছে যে আমরা ইতোমধ্যেই ক্ষমতায় চলে গেছি। কিন্তু আমরা জানি না আমরা ক্ষমতায় যাব কি না। জনগণের সমর্থন পেলে তবেই আমরা ক্ষমতায় যেতে পারব। আর এ জন্য জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে সবার আগে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, দলের কেউ যদি ভুল করে, তাদের সতর্ক করতে হবে, সচেতন করতে হবে এবং সঠিক পথে নিয়ে আসতে হবে। জনগণের আস্থা ধরে রাখা কঠিন, কিন্তু এটি আমাদের নেতাকর্মীদের দায়িত্ব। জনগণের সঙ্গে থাকতে হবে, জনগণকে সঙ্গে রাখতে হবে।
‘বিএনপি সব সময় দেশের উন্নতি ও জনগণের কল্যাণ চিন্তা করে কাজ করে’, এমনটা জানিয়ে তিনি বলেন, এ জন্যই দুই বছর আগে থেকেই বিএনপি সংস্কারের কথা বলে আসছে। এটা এমন বিষয় নয়, গত কিছুদিন আগে থেকে আমরা এটা বলছি। বিএনপি এটা অনেক আগে থেকেই বলে আসছে রাষ্ট্র সংস্কারে ৩১ দফার কথা। বিএনপি জনগণের দল যে কারণে ৩১ দফা বিষয়ে আলোচনা করে আসছে, যা এখন তৃণমূল পর্যায়ে পৌঁছাতে হবে। শুধু দলের নেতাকর্মী নয়, সাধারণ মানুষের কাছে এই ৩১ দফা পৌঁছে দিতে হবে এবং সেগুলোর পক্ষে সাধারণ মানুষের সমর্থন আদায় করতে হবে।
বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম রিঙ্কুর সভাপতিত্বে কর্মশালায় বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ, আরেক উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা জহিরুল হক শাহজাদা মিয়া, সহসাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মাসকুর রহমান মাসুক, মো. সেলিমুজ্জামান সেলিম, তারেক জিয়ার উপদেষ্টা ড. মাহাদী আমীন, বিএনপির প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন, বিএনপির সহত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক অ্যাডভোকেট নেওয়াজ হালিমা আরলী, কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক চৌধুরী নায়াব ইউসুফ, ফরিদপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেস আলী ইছা প্রমুখ।
দিনব্যাপী এ কর্মশালায় ফরিদপুর বিভাগের ৫টি জেলার বিএনপিসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নেন।
মন্তব্য করুন