বগুড়ায় প্রথমবারের মতো মাছের বারবিকিউ বানিয়ে বাজিমাত করেছেন দুই বন্ধু। তেলাপিয়া থেকে শুরু করে সামুদ্রিক মাছ রূপচাঁদা, কোরাল, লালপোয়া মাছের বারবিকিউ পাওয়া যাচ্ছে এখানে। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ আসছে ৩০ পদের মসলা মাখানো মাছের বারবিকিউ খেতে। এখন প্রতিদিন তার বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। মাসে যা দাঁড়ায় সাড়ে ৪ লাখ থেকে ৬ লাখ টাকা।
জানা গেছে, বগুড়া শহরের সাবগ্রাম এলাকার বাসিন্দা রেজওয়ানুর ইসলাম রিংকু ও রাজাবাজার এলাকার আল আমিন হৃদয় তারা দুজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং দুজনেই ব্যবসায়ী। প্রায় এক বছর আগে ডিসেম্বর মাসের শুরুতে নিজেরা বাড়িতে মাছের বারবিকিউ তৈরি করেছিলেন। ঘরে তৈরি সেই বারবিকিউ খেয়ে বন্ধুরা যখন প্রশংসা করছিলেন, তখনই সেই স্বাদ সবার কাছে পৌঁছে দিতেই শুরু হয় এই ব্যবসা। লাভ নয় মানুষদের খাওয়াতেই পছন্দ করেন দুই বন্ধু। এজন্য শহরে ফুলবাড়িতে ছোট্ট একটি দোকানেই শুরু করেন মাছের বারবিকিউয়ের যাত্রা।
রোববার ছাড়া প্রতিদিন ৩০ থেকে শুরু করে ৫০ কেজি পর্যন্ত বিভিন্ন আকৃতির মাছ বিক্রি করেন। ৩০০ গ্রাম ওজনের বেশি তেলাপিয়া মাছ প্রতিটি প্যাকেজ ১২০ টাকায়, সঙ্গে দুটি রুটি আর ঘরে তৈরি বিশেষ সস। আকার ভেদে ১২০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত তেলাপিয়া, ২৫০ থেকে ৫০০ টাকায় রূপচাঁদা, ৫০০ থেকে ১৫০০ টাকায় কোরাল মাছ বারবিকিউ হচ্ছে এখানে। প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে শুরু করে মধ্যরাত পর্যন্ত চলছে বেচাকেনা। উত্তরের প্রাণকেন্দ্র বগুড়া শহরের প্রথমবারের মতো মাছের বারবিকিউ নজর কেড়েছে সবার। সামুদ্রিক মাছ খেতে চাইলে আগেই অর্ডার করতে হয় এই দোকানে। বাজার থেকে কিনে আনা মাছ কেটে ৩০ পদের মসলা মেখে রেখে দিতে হয়, এরপর কয়লার আগুনে ২০ থেকে ২৫ মিনিট পুড়ে তৈরি করা হয় বারবিকিউ।
দোকানের মালিক রেজওয়ানুর ইসলাম রিংকু বলেন, চাইলেই আপনি বারবিকিউ খেতে পাবেন না। এ জন্য প্রথমে গিয়ে আপনাকে অর্ডার দিতে হবে। তখন আপনার নাম ও মোবাইল নম্বর লিখে অর্ডার নেওয়া হবে। এরপর ২০ থেকে ২৫ মিনিট অপেক্ষার পর পাবেন কাঙ্ক্ষিত মাছের বারবিকিউ। আগে তারা কাবাব বিক্রি করতেন। পরে ব্যবসার ধরন পাল্টানোর জন্য মাছের বারবিকিউ করার পরিকল্পনা করেন।
গত বছরের ৪ ডিসেম্বর বগুড়া শহরের ফুলবাড়িতে আজিজুল হক কলেজের গেটের সামনে দোকান শুরু করে ব্যবসা। বিকেল ৫টা থেকে রাত ১১টা অবধি চলে বেচাকেনা। বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়স্বজন, স্বামী-স্ত্রী এমনকি কাপলরাও আসছেন নতুন মাছের এই বারবিকিউ খেতে।
বগুড়া আজিজুল হক কলেজের ছাত্র রবিউল ইসলাম বলেন, মাঝেমধ্যেই বন্ধুদের নিয়ে এখানে মাছের বারবিকিউ খেতে আসি। নতুন আইটেম। এজন্য প্রচুর ভিড়। সিরিয়াল দিয়ে খেতে হয়।
শহরের এরুলিয়ার গৃহবধূ জেসমিন আক্তার স্বামীর সঙ্গে এসেছেন মাছের বারবিকিউ খেতে। আগে ফেসবুকে দেখেছেন। এজন্য স্বামীকে সঙ্গে করে এনেছেন। মাছের বারবিকিউ খেতে খুব স্বাদ। সরিষার তেলের সঙ্গে মসলার নানা ফ্লেভার দিয়ে তৈরি করায় স্বাদ খুব সুন্দর।
দোকানের অন্য মালিক বন্ধু আল আমিন হৃদয় জানান, ব্যবসা আগের তুলনায় বাড়ছে। বেচাকেনা ভালো হচ্ছে। তিনি বলেন, ক্রেতাদের সহযোগিতা পেলে আগামীতে ব্যবসা বড় করার পরিকল্পনা আছে।
মন্তব্য করুন