চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের চৌরাস্তা এলাকায় দৈনিক ভাড়া বাবদ পাওনা টাকা না পেয়ে ক্ষোভ মেটাতে শরীফ তালুকদার (১৯) নামে সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালককে হত্যার পর ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রোববার (১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন চাঁদপুর সদর মডেল থানার পুলিশ পরির্দশক (তদন্ত) রাজিব চক্রবর্তী।
এর আগে গত শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) রাত আনুমানিক ৯টার দিকে বাগাদী চৌরাস্তা এলাকায় রাসেল গাজীর অটোরিকশার পার্টসের দোকানে এ ঘটনা ঘটে। ভোর ৫টার দিকে চাঁদপুর সদর মডেল থানার এসআই মো. শাহজাহান ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে ওই চালকের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন।
এ ঘটনায় রোববার দুপুরে চালক শরীফ তালুকদারের মামা মো. জসিম উদ্দিন ভুঁইয়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। নিহত চালক শরীফ তালুকদার বাগাদী ইউনিয়নের ব্রাহ্মণ সাখুয়া গ্রামের তালুকদার বাড়ির মফিজ তালুকদারের ছেলে। তার মায়ের নাম আয়েশা বেগম।
অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন চৌরাস্তার অটোরিকশার পার্টসের দোকানদার নানুপুর গ্রামের মুজিব গাজীর ছেলে মো. রাসেল গাজী (২৮) ও তার দোকানের মিস্ত্রি সুমন পাটওয়ারীসহ (৩৫) অজ্ঞাতনামা কয়েকজন।
অভিযোগকারী জসিম উদ্দিন ভুঁইয়া বলেন, আমার ভাগিনা শরীফের কাছ থেকে রাসেল গাজী অটোরিকশার দৈনিক ভাড়া বাবদ ১১ হাজার টাকা পাওনা ছিল। ওই টাকা আগামী ১২ ডিসেম্বর পরিশোধ করার কথা। কিন্তু এরই মধ্যে শনিবার রাত আনুমানিক ৯টার দিকে রাসেল তার দোকানে ডেকে এনে ভাগিনা শরীফকে মারধর করে। মারধরে তার মৃত্যু হয়েছে বুঝতে পেরে দোকানের কাঠের সঙ্গে পরনের বেল্ট দিয়ে ঝুলিয়ে রাখে। ভোর রাতে এলাকার মনির হোসেন মেম্বারের মাধ্যমে আমরা এ ঘটনা জানতে পারি এবং ঘটনাস্থলে যাই।
তিনি আরও বলেন, ঘটনাস্থল থেকে ভোর আনুমানিক ৫টার দিকে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা পালিয়েছে।
নিহত চালক শরীফ তালুকদারের স্ত্রী বিউটি বেগম ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা। বিউটির বাবা পার্শ্ববর্তী ফরিদগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ হরিণা গ্রামের বাসিন্দা মোশাররফ সিকদার।
তিনি বলেন, মেয়ে আমাকে জানিয়েছে, গত রাতে দোকানদার রাসেল শরীফকে টাকার জন্য দোকানে আটকে রাখে। আমার মেয়েকে তিন হাজার টাকা পাঠানোর জন্য চাপ দেন রাসেল। বিউটি সকালে টাকা দেবে এবং তার স্বামীকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করে। কিন্তু তারা মেয়ের কথা শোনেনি।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) রাজিব চক্রবর্তী বলেন, ঘটনাস্থল থেকে ওই চালকের মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। ঘটনাটি তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন