শেখ হাসিনা সরকার পতনের সাড়ে তিন মাস অতিক্রম করেছে। রাষ্ট্রীয়সহ বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান থেকে তার নাম মুছে ফেলা হলেও হাসিনা প্রীতি যায়নি যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ মনিরামপুর অফিস কর্মকর্তাদের মাঝ থেকে। শেখ হাসিনার উন্নয়নের প্রচার এখনো অব্যাহত রেখেছেন তারা।
যার প্রমাণ গ্রাহকের ঘরে ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে প্রতি মাসে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে প্রতিক্রিয়াও রয়েছে। নভেম্বর মাসের বিদ্যুৎ বিলপত্রে তার উন্নয়নের প্রচার এখনো দৃশ্যমান। বিলের কাগজের উপরি অংশে স্লোগান হিসেবে লেখা ‘শেখ হাসিনার উদ্যোগ, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ।’
জানা যায়, যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতায় প্রায় ৬ লাখ গ্রাহক রয়েছেন। প্রতি মাসের নির্ধারিত সময়ে গ্রাহকের কাছে বিদ্যুৎ বিলের কাগজ পৌঁছে দেওয়া হয়। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের পর থেকে সারা দেশে শেখ হাসিনার নাম, ফলকসহ টাঙানো ছবিও সরিয়ে ফেলা হয়। কিন্তু বোধোদয় হয়নি মনিরামপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির নীতিনির্ধারকদের। তারা রীতিমতো শেখ হাসিনা স্মরণে তার উন্নয়নের প্রচার বার্তা এখনো চালিয়ে যাচ্ছেন। নভেম্বর মাসের বিলের কাগজেও তা বিদ্যমান।
এ নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক মহলে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। তবে, বিষয়টি নিয়ে অফিস কর্তাদের রয়েছে ভিন্ন কথা। কর্তৃপক্ষের দাবি অচিরেই স্লোগানটি সংশোধন করা হবে।
মনিরামপুর থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান মিন্টু বলেন, সাড়ে তিন মাস হয়ে গেল শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে। তবে তার দোসররা এখনো ঘাপটি মেরে বিভিন্ন দপ্তরে বসে আছেন। তাই তারা এখনো হাসিনার নাম প্রচারে ব্যস্ত। এদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।
উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা লেয়াকত আলী বলেন, এটা কোনো অবস্থায় কাম্য নয়। অচিরেই কর্তৃপক্ষের সংশোধন করা উচিত।
জমিয়াতে উলামায়ে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মুফতি রশিদ আহম্মেদ বলেন, এখানে যারা আছে তারা তার সমর্থক গোষ্ঠী হতে পারেন। অথবা দায়িত্বহীনতার কারণে প্রচারণা চালিয়েছেন। তবে স্লোগানটি সরিয়ে ফেলা দরকার।
থানা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শহীদ ইকবাল হোসেন বলেন, একজন স্বৈরাচারের বিদায় হয়েছে। কিন্তু পল্লী বিদ্যুৎ এমনটা কেন করছে, যেটি কাম্য নয়। স্লোগানটি এখনই সংশোধন করা প্রয়োজন।
যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জেনারেল ম্যানেজার আব্দুল লতিফ কালবেলাকে বলেন, টেন্ডারের মাধ্যমে বছরে দুবার বিদ্যুৎ বিলের কাগজ ছাপানো হয়। গেল মাসের বিলের কাগজে সংশোধন করা হয়নি। তবে আগামী মাস থেকে সংশোধন করা হবে।
মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত তামান্না কালবেলাকে বলেন, প্রতিটি দপ্তর থেকে সংশোধন করা হয়েছে। পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সমাধান করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন