নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয় পর্যটন স্পটে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ব্যাপারে গণসচেতনতা সৃষ্টি, ক্লিন-আপন কর্মসূচি এবং আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) নরওয়ে সরকারের অর্থয়নে ইউনাইটেড নেশনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (ইউনিডো) কারিগরি সহায়তায় এবং পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক ‘ইন্ট্রিগ্রেডেট অ্যাপ্রোচ টু ওয়ার্ডস সাইটেইনেবল প্লাস্টিকস ইউজ অ্যান্ড মেরিন লিটার প্রিভেনশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক কারিগরি সহায়তা প্রকল্পের আওতায় এ আয়োজন করা হয়।
পলিথিন/পলিপ্রপাইলিন শপিং ব্যাগসহ প্লাস্টিক বর্জ্যরে বিরুদ্ধে বিদ্যমান সরকারের নিষেধাজ্ঞা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন এবং রিসাইকেলযোগ্য প্লাস্টিক বা পরিবেশবান্ধব পণ্য ব্যবহারের লক্ষ্যে আয়োজিত এই ক্লিনআপ কর্মসূচি ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমান, বাংলাদেশে ইউনিডোর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ জাকি উজ জামান, ইউনিডোর ন্যাশনাল এক্সপার্ট এস এম আরাফাত, পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক এ এইচ এম রাশেদ, পরিবেশ ও পরিছন্নতা আন্দোলনে কর্মরত ১৪টি স্বেচ্ছাসবী সংগঠনের তিন শতাধিক কর্মী, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের নেতারা, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার স্থানীয় জনসাধারণ ও স্বেচ্ছাসেবীরা।
এই কর্মসূচির প্রধান লক্ষ্য ছিল স্থানীয় পর্যায়ে প্লাস্টিক বর্জ্য পুনঃপ্রক্রিয়াজাত করার লক্ষ্যে সার্কুলার ইকোনমি অনুসরণ ও বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তর করা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে সোনারগাঁ উপজেলা কর্মকর্তা ফারজানা রহমান বলেন, আজকের এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হলো স্থানীয় জনসাধারণকে বিশেষ করে পর্যটকদের পরিবেশসচেতন করে তোলা এবং অপচনশীল বর্জ্য সৃষ্টির অভ্যাসকে নিরুৎসাহিত করা। কারণ প্লাস্টিক বর্জ্য প্রাণ, মাটি, বাতাস ও পরিবেশ সবার জন্যই আপদসরূপ।
ইউনিডোর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ জাকি উজ জামান বলেন, অভ্যাস গড়ে ওঠে নিজ ঘর থেকেই। তাই আমরা নিজে ও পরিবারের লোকজন প্রথমেই শপথ নেব যে এখন থেকে আমরা প্লাস্টিক বা পলিথিন ব্যবহারে সচেতন হব। আমাদের দেশ এমনিতেই একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। প্লাস্টিক বর্জ্যের কারণ হচ্ছে আন্তদেশীয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। তাই জরুরি বিষয় হলো নিজে ও পরিবারে প্লাস্টিক বা পলিথিন ব্যবহারে সজাগ হওয়া।
ইউনিডোর ন্যাশনাল এক্সপার্ট এস এম আরাফাত বলেন, এখন থেকে আমাদের শপথ নিতে হবে যে যেসব প্লাস্টিক বর্জ্য কেউ সংগ্রহ করে না, সেগুলো আমরা ব্যবহার করবো না। শুধু পুনর্ব্যবহারযোগ্য ও পুনঃপ্রক্রিয়াজাতযোগ্য প্লাস্টিক ব্যবহার করব।
নারায়ণগঞ্জের পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা এ এইচ এম রাশেদ বলেন, সব প্লাস্টিকের ব্যাপারেই দেশে নিষেধাজ্ঞা নেই। ৯০ শতাংশ প্লাস্টিক সামগ্রী রিইউজ এবং রিসাইকেলযোগ্য। তবে ইনফরমাল সেক্টরে প্লাস্টিক সামগ্রী ব্যবহারের পর রিইউজ বা রিসাইকেল করা হয় না। আলোচনা সভা ও ক্লিনআপ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সোনারগাঁ উপজেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা শেখ মুজাহিদ, স্থানীয় করোনাযোদ্ধা ও পরিবেশ আন্দোলনের নেতা সানাউল্লাহ, স্থানীয় বিজয়ধ্বনি পরিবেশ সংগঠনের সভাপতি ফারুক হোসেন, স্থানীয় পরিবেশ কর্মী মোহাম্মদ হোসেন, তারুণ্যের সোনারগাঁ ফাউন্ডেশনের সহসভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, স্থানীয় সাংবাদিক এবং বিডি ক্লিনের সভাপতি কামরুজ্জামান রানা প্রমুখ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে পরিচ্ছন্নতার জন্য শপথগ্রহণ ও স্বেচ্ছাসেবীদের আয়োজনে ক্লিনআপ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। শপথগ্রহণ ও পরিছন্নতা কর্মসূচি উদ্বোধন এবং শপথবাক্য পাঠ করান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমান। এতে অংশ নেন ইউনিডো কর্মকর্তাসহ উপস্থিত অতিথিরা।
মন্তব্য করুন