বকেয়া বেতনের দাবিতে আশুলিয়ায় ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় (ডিইপিজেড) তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা। টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বকেয়া পরিশোধের দাবীতে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করে ডিইপিজেডের মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন লেনী ফ্যাশনস ও লেনী অ্যাপারেলস কারখানার শ্রমিকরা।
চার বছর আগে বন্ধ হওয়া কারখানাটির প্রায় সাড়ে সাত হাজার শ্রমিক এই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। ফলে নবীনগর চন্দ্রা মহাসড়কের কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যান।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) বেলা ১১টার পর থেকে সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করছেন ডিইপিজেড কতৃপক্ষ।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানান, চার বছর আগে করোনার দোহাই দিয়ে শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধ না করেই বন্ধ করে দেয়া হয় লেনী ফ্যাশন ও লেনী অ্যাপারেলস কারখানা। এরপর কারখানা দুটির একটি বিক্রি করে দেন বাংলাদেশের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলসমূহের নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বেপজা কর্তৃপক্ষ। কারখানা বিক্রি করে টাকা ব্যাংকে রাখলেও পরিশোধ করা হয়নি শ্রমিকদের বকেয়া।
শ্রমিকরা জানান, বকেয়া বেতনের দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকেই ডিইপিজেডের সামনে জড়ো হন তারা। পরে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। রাত আনুমানিক ১০টার দিকে মূল সড়ক ছেরে ডিইপিজেডের মূল ফটকের সামনে অবস্থান নেন এবং সকালে ডিইপিজেডের কারখানাগুলোর শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে আসলে তাদের ঢুকতে না দিয়ে মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিলে শ্রমিকরা ফিরে যান।
পরে সারারাত মূল ফটকের সামনে অবস্থান শেষে আবার আজ বুধবার সকাল থেকেই সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন শ্রমিকরা।
শ্রমিক রায়হান বলেন, আমরা গতকাল থেকে সড়কে পরে আছি। আমরা কোন আন্দোলন চাইনা। আমাদের পাওনা পরিশোধ করে দিলে আমরা বেঁচে যাই। চার বছর ধরে আমাদের ঘুরাচ্ছে, আর কতো ?
অপর শ্রমিক ফিরোজ মিয়া বলেন, আমাদের সাথে বেপজা অবিচার করছে। তারা বলেছিল ফ্যাক্টরি বিক্রি হলে আমাদের টাকা দিয়ে দিবে কিন্তু তারা ফ্যাক্টরি বিক্রি করে টাকা রেখে দিয়েছে ব্যাংকে। কেন আমাদের পাওনা টাকা না দিয়ে টাকা ব্যাংকে রেখে দিয়েছে। আমাদের টাকা পাওয়ার আগ পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বনা। প্রয়োজনে রাস্তায় মরব।
মর্জিনা নামে এক শ্রমিক বলেন, আমরা কোনো সাহায্য চাইতে আসিনি। আমাদের পাওনা চাইতে এসেছি। আজকের মধ্যে আমাদের পাওনা বুঝিয়ে না দিলে কঠোর আন্দোলনে যাব আমরা।
আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, সমস্যা সমাধানে ডিইপিজেড কর্তৃপক্ষ শ্রমিক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। আমরাও শ্রমিকদের বুঝানোর চেষ্টা করছি।
বেপজার নির্বাহী পরিচালক (জনসংযোগ) আনোয়ার পারভেজ বলেন, বেপজার পক্ষ থেকে শ্রমিকদের বুঝানোর চেষ্টা চলছে। তাদেরকে আমরা চাইলেও এই মুহুর্তেই দুটি কারখানার শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না সেটি বুঝানোর চেষ্টা করছি। কারখানা বিক্রির পদ্ধতি, আইনি প্রক্রিয়া এবং বকেয়া পরিশোধের পদ্ধতির বিষয়টি তাদের জানানো হচ্ছে।
মন্তব্য করুন