কেন্দ্রীয় বিএনপির কর্মসংস্থান বিষয়ক সহ-সম্পাদক, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান, সাবেক সংসদ সদস্য ও খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি ওয়াদুদ ভূঁইয়া বলেছেন, সম্প্রদায় জাত-ভেদ ভুলে বাংলাদেশি হয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে পাহাড়বাসী ও দেশবাসীকে উদ্দেশ করে তিনি এ আহ্বান জানান।
ওয়াদুদ ভুঁইয়া বলেন, গত সাড়ে তিন মাসে আপনারা দেখেছেন জুডিশিয়াল কুর চেষ্টা, আনসার বিদ্রোহের নামে, আইনজীবী বিদ্রোহের নামে, রিকশাচালকদের বিদ্রোহের নামে, পল্লি বিদ্যুৎ বিদ্রোহের চেষ্টা কিংবা পাহাড়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, আপনারা দেখে আসছেন বাংলাদেশের সাধারণ সনাতনী সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতি ও আবেগকে পুঁজি করে বারবার সংঘাত বাধানোর অপচেষ্টা চলছে। গত দুই দিনে হাসিনা-মুজিবের প্রভু দেশের ইশারায় কলেজছাত্রদের দাঙ্গা ও হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গা লাগিয়ে বাংলাদেশকে চরম অস্থিতিশীলতায় ফেলে পুনরায় ক্ষমতার মসনদে বসবার স্বপ্ন দেখছে পলাতক স্বৈরাচারী। হাসিনা আর একটি বিদেশি রাষ্ট্রের এ অপচেষ্টা এখনো অব্যাহত রয়েছে।
এর আগেও চট্টগ্রামে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আবেগ-অনুভূতির সুযোগ নিয়ে পুরো বাংলাদেশে সম্প্রীতি বিনষ্টের চেষ্টা করেছে আওয়ামী লীগের পালিয়ে থাকা নেতারা উল্লেখ করে ওয়াদুদ ভুইয়া বলেন, একটি বিদেশি রাষ্ট্রের প্রেসক্রিপশনে হাসিনার নির্দেশে ধর্মীয় নেতার লেবাস ধরে একজন তথাকথিত ধর্মীয় গুরু গত তিন মাস ধরে একের পর এক উসকানি দিয়ে আসছিলেন। রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা থাকা সত্ত্বেও তিনি সভা-সমাবেশ করে বেড়াচ্ছিলেন এবং ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়িয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করে আসছিলেন। তার মূল উদ্দেশ্যই ছিল আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ এবং বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ হিসেবে উপস্থাপন করা।
ওয়াদুদ ভুঁইয়া বলেন, হাসিনার নির্দেশে তার পালিয়ে থাকা দোসররা মিথ্যা প্রপাগান্ডা ছড়িয়ে, হত্যা ও হামলার মিথ্যা তথ্য প্রচার করে সাম্প্রদায়িক সংঘাত লাগানোর চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
তিনি বলেন, আপনারা লক্ষ্য করলে দেখবেন, গত দুই দিনে সারা দেশে সনাতনী সম্প্রদায়ের কারোই প্রাণহানি ঘটেনি। তারুণ্যের অহংকার তারেক রহমানের নির্দেশে সারা দেশে বিএনপির নেতাকর্মীরা সজাগ থাকায় কোনো সংঘাতের ঘটনা এবং প্রাণহানি ঘটানোর সুযোগ পায়নি তারা। অথচ আওয়ামী দোসররা, সংঘাত লাগানোর অপচেষ্টাকারীরা গত দুই দিনেও সাত ছাত্র নিহত ও বহু সনাতনী নিহত হওয়ার গুজব ছড়িয়েছে। চট্টগ্রামের আদালত প্রাঙ্গণে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে প্রকাশ্যে হত্যা করে ঘটনাপ্রবাহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় রূপ দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছে আওয়ামী ডাইনি হাসিনা।
পাহাড়সহ সারা দেশের মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানসহ সব শান্তিকামী দেশপ্রেমী নাগরিকদের সবিনয়ে শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়ে জেলা বিএনপির সভাপতি ওয়াদুদ ভুইয়া বলেন, আপনারা ধৈর্য ধারণ করুন। এখনো আমাদের কাঙ্ক্ষিত বিজয় অর্জিত হয়নি। ভিন্ন ধর্মাবলম্বী কোনো ভাইয়ের সাথে দ্বন্দ্ব-সংঘাতে জড়াবেন না, আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। ভিনদেশি চক্রান্তে পা দেবেন না। আমাদের বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। কোনোভাবেই আমাদের এই সম্প্রীতি বিনষ্ট হতে দেওয়া যাবে না।
আইনজীবী আলিফের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করার জোর দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা নিশ্চিত যে, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড এবং এর বিচার নিশ্চিত করতেই হবে। কোনো নির্দিষ্ট সংগঠন এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকলে সে সংগঠনের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে আমরা সব মতভেদ ভুলে একযোগে কাজ করতে চাই। সে সঙ্গে আমরা পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে আরও কঠোর হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
মন্তব্য করুন