হিন্দু জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে নাটোরে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে হিন্দু জাগরণ মঞ্চ নাটোর জেলা শাখা।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে নাটোর প্রেস ক্লাবের সামনে এ বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা।
হিন্দু জাগরণ মঞ্চের নেতা দেবাশীষ কুমার সরকারের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন অ্যাডভোকেট ভাস্কর বাগচী চন্দন নাগ প্রমুখ। বক্তারা আগামীকাল মঙ্গলবার সকালের মধ্যে চিন্ময় প্রভুকে মুক্ত না করলে দুপুরে আবারো বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, একটি অহিংস আন্দোলনের নেতাকে কোনোরকম দোষ ছাড়াই গ্রেপ্তার করা এবং হয়রানি করায় তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অবিলম্বে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আট দফা দাবি মেনে নিতে হবে। এই বিক্ষোভ সমাবেশকে ঘিরে সমাবেশ স্থলের চারদিকে পুলিশ সেনাবাহিনীর সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক অবস্থায় অবস্থান নিতে দেখা যায়। কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই সমাবেশ শেষ হয়।
এর আগে আজ বিকেলে ঢাকা থেকে বিমানে চট্টগ্রাম যাওয়ার কথা ছিল চিন্ময়ের। সে সময় ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিক। তিনি বলেন, ‘পুলিশের একটি অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে ডিবি গ্রেপ্তার করেছে। যারা আবেদন করেছে, তাদের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হবে।’
উল্লেখ্য, গত ৩০ অক্টোবর চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। মো. ফিরোজ খান নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালি থানায় মামলাটি করেন। জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে এ মামলা দায়ের হয়। মামলার পরই দুজনকে গ্রেপ্তার করেছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তারা হলেন- রাজেশ চৌধুরী ও হৃদয় দাশ।
মামলার আসামিরা হলেন- পুণ্ডরীক ধাম মন্দিরের অধ্যক্ষ চন্দন কুমার ধর প্রকাশ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী, চট্টগ্রামের হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সমন্বয়ক অজয় দত্ত (৩৪), নগরীর প্রবর্তক ইসকন মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলা রাজ দাশ ব্রহ্মচারী (৪৮), গোপাল দাশ টিপু (৩৮), ডা. কথক দাশ (৪০), প্রকৌশলী অমিত ধর (৩৮), রনি দাশ (৩৮), রাজীব দাশ (৩২), কৃষ্ণ কুমার দত্ত (৫২), জিকু চৌধুরী (৪০), নিউটন দে ববি (৩৮), তুষার চক্রবর্তী রাজীব (২৮), মিথুন দে (৩৫), রুপন ধর (৩৫), রিমন দত্ত (২৮), সুকান্ত দাশ (২৮), বিশ্বজিৎ গুপ্ত (৪২), রাজেশ চৌধুরী (২৮) এবং হৃদয় দাস (২৫)। একই মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
জানা যায়, চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে তিনি চিন্ময় প্রভু নামে পরিচিত। এ ছাড়া তিনি পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ। সম্প্রতি বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ ও বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোট নামে দুটি সংগঠন ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের’ ব্যানারে কর্মসূচি পালন শুরু করে। নতুন এই জোটের মুখপাত্র করা হয় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে। কয়েক দিন আগে এই জোট আট দফা দাবিতে রংপুরে সমাবেশ করে।
মন্তব্য করুন