‘সেবার ব্রতে চাকরি’ স্লোগানে শতভাগ মেধা, যোগ্যতা ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে লক্ষ্মীপুরে পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে চাকরি পেয়েছেন ৫০ তরুণ-তরুণী। এই চাকরি পেতে অনলাইন আবেদন খরচ বাবদ জনপ্রতি খরচ হয়েছে মাত্র ১২০ টাকা।
রোববার (২৪ নভেম্বর) রাতে লক্ষ্মীপুর পুলিশ লাইনসে নতুন চাকরি পাওয়ায় এই তরুণ-তরুণীদের পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করেন লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার মো. আকতার হোসেন।
এতে মেধার ভিত্তিতে ৪৮ এবং মুক্তিযোদ্ধা কোটায় দুজন প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। এ সময় তাদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন জেলা পুলিশ সুপার।
এদিকে কোনো ধরনের হয়রানি, সুপারিশ ও ঘুষ ছাড়া পুলিশের গর্বিত সদস্য হতে পেরে খুশিতে আত্মহারা হতদরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারে এসব তরুণ-তরুণী।
জানা গেছে, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণসহ সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় অক্টোবর ২০২৪-এর ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদের নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের মাধ্যমে তাদের নির্বাচিত করা হয়। এ সময় এক আনন্দঘন মুহূর্ত দেখা গেছে পুলিশ লাইনে।
নিজ যোগ্যতা ও মেধায় চাকরির ফলাফল পাওয়া মাত্রই ৫০ তরুণ-তরুণী আনন্দে বিমোহিত হন। এ সময় পুলিশের ড্রিল শেড মুহূর্তে পরিণত হয় আনন্দ ও কান্নার মিলনমেলায়। অনেকের নাম ঘোষণার পরপরই অশ্রুতে ভিজে যায় চোখ। অনেকেই চাকরি পেয়ে আনন্দ-উল্লাস করেন।
এমন স্বচ্ছ নিয়োগপ্রক্রিয়ায় বিনামূল্যে সন্তানের চাকরি পেয়ে পুলিশ সুপারকে খুশিতে কান্নায় জড়িয়ে ধরেন অনেক অভিভাবক।
কথা হয় চাকরি পাওয়া কয়েকজনের সঙ্গে। তারা বলেন, জীবনে প্রথমবার চাকরির আবেদন করেছি। আজ নিজ মেধা ও যোগ্যতায় চাকরি পাওয়ায় ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই জেলা পুলিশ সুপারকে।
কয়েকজন অভিভাবক বলেন, ছেলেমেয়েদের নিয়ে খুবই চিন্তায় ছিলাম। মানুষের কাছে শুনেছি সরকারি চাকরি নিতে গেলে টাকা লাগে, লোক লাগে। কিন্তু এখন দেখি সব ধারণা ভুল। মাত্র ১২০ টাকা দিয়ে যে পুলিশে চাকরি হবে, কখনো চিন্তাও করিনি। এত সুন্দর ও স্বচ্ছভাবে পুলিশে চাকরি পরীক্ষার ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য পুলিশ সুপারকে ধন্যবাদ জানাই।
লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার মো. আকতার হোসেন বলেন, নিজের যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে আজ চাকরি পেলেন ৫০ জন তরুণ-তরুণী। যারা আজ নিয়োগ পেয়েছেন, তারা সবাই নিজেদের যোগ্যতা ও মেধায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। এতে তাদের কোনো যোগাযোগ, লবিং ও ঘুষ বিনিময় করতে হয়নি। তাদের আবেদন করতে যে খরচ হয়েছে মাত্র ১২০ টাকা, সেটিই তাদের খরচ। আশা করছি যারা পরীক্ষা উত্তীর্ণ হয়ে বাংলাদেশ পুলিশের নতুন সদস্য হলেন, তারা সবাই দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করবেন। তাদের জন্য অনেক শুভকামনা।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, স্মার্ট পুলিশ তৈরি করার জন্য স্বচ্ছভাবে লক্ষ্মীপুরে ৫০ জনকে নিয়োগ দিয়েছি। এখানে সবাই মেধাবী। এরা রাষ্ট্রের অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করবে। ঘুষ ছাড়া যেহেতু চাকরি হয়েছে, তারা সৎভাবেই দায়িত্ব পালন করবেন বলে আশা করছি।
মন্তব্য করুন