ঠিকাদারি কাজ নিয়ে দ্বন্দ্বে বরিশাল গণপূর্ত বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলীকে (এসও) প্রকাশ্যে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ক্ষমতাসীন দলের এক ঠিকাদারের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে গণপূর্ত বিভাগের সব-অফিসে এই ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন : মন্ত্রীর সামনেই আ.লীগ নেতাকে মঞ্চ থেকে নামিয়ে মারধর
হামলা ও মারধরের শিকার প্রকৌশলী ওবায়দুল হক গণপূর্ত বিভাগের বরিশাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল জোনে কর্মরত। এ ঘটনায় প্রকৌশল বিভাগের প্রকৌশলীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা সাংগঠনিকভাবে এই ঘটনা মোকাবিলা করবেন বলে জানিয়েছেন প্রকৌশলী ওবায়দুল হক।
যদিও প্রকৌশলীকে মারধর বা লাঞ্ছিত করার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত ঠিকাদার বরিশাল নগরীর দক্ষিণ আলেকান্দা মৃধা বাড়ির বাসিন্দা মারুফ হোসেন জিয়া। তার দাবি, নিজেদের মধ্যে সামান্য কথাকাটাকাটি হয়েছে।
অভিযুক্ত নগরীর দক্ষিণ আলেকান্দা মৃধা বাড়ির বাসিন্দা মারুফ হোসেন জিয়া সদ্য অনুষ্ঠিত বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ১১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হয়েছেন। তিনি পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম অনুসারী হিসেবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে জানা গেছে। তার বোন আয়শা তৌহিদ লুনা বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র।
গণপূর্ত বিভাগ মেডিকেল কলেজ উপ-বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী ওবায়দুল হক জানান, ‘মারুফ হোসেন জিয়া গণপূর্ত বিভাগে ঠিকাদারি করেন। কিছু ঠিকাদারি কাজ রয়েছে যেগুলো স্টিমিট করে ঠিকাদাররা ঢাকায় লবিং করে অনুমোদন করে আনেন।
তিনি বলেন, ‘শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডক্টর্স হোস্টেলের ৩০ লাখ টাকার কাজের একটি স্টিমিট ইতিপূর্বে মারুফ হোসেন জিয়া নিয়েছেন। কিন্তু তিনি সেই স্টিমিটটি হারিয়ে ফেলেছেন। নতুন করে আবার স্টিমিট চাচ্ছেন।
বেলা ১১টার দিকে তিনি মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসের কাঁঠালতলা অফিসে এসেই স্টিমিট নেয়ার জন্য আমাকে এবং অফিসের স্টাফদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। এর প্রতিবাদ করতেই মারুফ হোসেন জিয়া সকলের সামনেই আমাকে মারধর শুরু করে। তখন উপস্থিত অন্যরা আমাকে রক্ষা করে।
ওবায়দুল হক বলেন, ‘এর আগেও মারুফ হোসেন জিয়া বেশ কয়েকবার আমাদের কার্যালয়ে এমন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেছেন। এমনকি নির্বাহী প্রকৌশলী, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীর কার্যালয়ে গিয়েও তিনি এ ধরনের কর্মকাণ্ড করেছেন। ইতোপূর্বে এমন আচরণ করতে গিয়ে উপস্থিত ঠিকাদারদের হাতে মারও খেয়েছেন। কিন্তু আজ আবার সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটালেন জিয়া।
প্রকৌশলী ওবায়েদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি। এ ছাড়া আমাদের প্রকৌশলীদের যে সংগঠন রয়েছে, সেই সংগঠনের নেতাদেরও জানিয়েছি। এ বিষয়ে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নিবেন সে বিষয়ে তারাই সিদ্ধান্ত জানাবেন। আইনগত সহায়তা নিব কি না তা আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ঠিকাদার মারুফ হোসেন জিয়া। তিনি বলেন, ‘প্রকৌশলী ওবায়দুল হক যেভাবে বিষয়টি উপস্থাপন করছেন, আসলে তেমন কিছুই ঘটেনি। তার সঙ্গে আমার বন্ধুত্বের সম্পর্ক। সামান্য বিষয় নিয়ে কথাকাটাকাটি হয়েছে। পরে যখন এক টেবিলে বসে চা খাব তখন আবার সব ঠিক হয়ে যাবে।
মন্তব্য করুন