গাজীপুরের শ্রীপুরে অটোরিকশা চোর সন্দেহে মো. মিন্টু মিয়া (২৫) নামের এক যুবককে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে বর্বরভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। এ নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নির্যাতনের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
প্রায় সাত ঘণ্টা নির্যাতনের পর রাত সাড়ে ৯টার দিকে শ্রীপুর গ্রামের সূতাপাড়া এলাকার বিশালের বাড়ি থেকে ভিকটিমকে উদ্ধার করে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয় তিন যুবককে। রাতেই মিন্টু বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় মামলা করেন।
নির্যাতনে শিকার মিন্টু মিয়া উপজেলার বহেড়ারচালা গ্রামের আউয়ালের মোড় এলাকার আইয়ুব আলীর ছেলে। গ্রেপ্তাররা হলেন- শ্রীপুর গ্রামের মো. সেলিম গনির ছেলে পাভেল (২২), আছর আলী ফকিরের ছেলে মো. ইব্রাহীম (২৮) ও মৃত আ. মান্নানের ছেলে মো. জসিম (৩৮)।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে শ্রীপুর-মাওনা আঞ্চলিক সড়কের পাভেলের দোকানের পাশে অটোরিকশা রেখে টয়লেটে যান চালক। এ সুযোগে মিন্টু ওই রিকশা নিয়ে যেতে থাকে। স্থানীয় কতিপয় যুবক মোটরসাইকেল নিয়ে অটোরিকশার পিছু ধাওয়া করে। কিছু দূর গিয়ে অটোরিকশাটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধান খেতে উল্টে পড়ে। পরে ওই যুবকরা মিন্টুকে ধরে পাভেলের দোকানের সামনের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করে।
সন্ধ্যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ওই যুবককে নির্যাতনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, যুবকেরা মিন্টুকে প্রথমে গণধলাই দিচ্ছে। যে যার মতো কিল-ঘুষি-লাথি মারছে। তারা তার গলা চেপে ধরে, পিলারের সঙ্গে রশি দিয়ে পেছনে দুহাত বাঁধে ও মাটিতে বসিয়ে দুই উরুর ওপর পাড়া দেয়। এ সময় ওই যুবক মা, ওমা আমারে মাইরালাইব। আমারে বাঁচাও। বলে চিৎকার করতে শোনা যায়।
ভিকটিম মিন্টু মিয়া জানান, তিনি চোর নন। আগে কখনো চুরি করেননি। তার পঁচিশ হাজার টাকা ঋণ রয়েছে। সে টাকার চাপে বাধ্য হয়ে অটোরিকশা চুরি করেন। যুবকরা তাকে ধরে নির্মমভাবে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মারধর করে। হাতে-পায়ে ধরেও রক্ষা পাইনি। আমি মরে যাব বলে আমাকে ছেড়ে দেয়। কিছু দূর যাওয়ার পর আমাকে ধরে একটি বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানেও খুঁটির সঙ্গে বেঁধে মারধর করে। রাতে পুলিশ আমাকে উদ্ধার করে। এতে আমি প্রাণে বেঁচে যাই।
শ্রীপুর থানার ওসি মো. জয়নাল আবেদীন মণ্ডল কালবেলাকে জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক যুবককে নির্যাতনের খবর পাই। তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে ভিকটিমকে উদ্ধার করা হয়। রাতেই মামলা হয়। তিনজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
মন্তব্য করুন