বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়ার পথে আগে বখাটেরা যৌন হয়রানি করলে মুখ বন্ধ করেই থাকত ছাত্রীরা। তবে এখন আর কেউ মুখ বন্ধ করে বসে থাকে না। সোজা বিদ্যালয়ে গিয়ে জানিয়ে দেয় শিক্ষকদের।
তারপর শিক্ষকরা ওই বখাটের অভিভাবককে ডেকে অভিযোগ করেন। রাজশাহীর পবা উপজেলার ৬টি বিদ্যালয়ের প্রায় ১ হাজার ২০০ ছাত্রীকে এমন প্রতিবাদী করে গড়ে তোলা হচ্ছে।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক -এর অ্যাওয়ারনেস, অ্যাকশন, অ্যান্ড অ্যাডভোকেসি ফর জেন্ডার ইক্যুয়াল অ্যান্ড সেইফ স্পেসেস ফর উইমেন অ্যান্ড গার্লস (অগ্নি) প্রকল্পের সহযোগিতায় ছাত্রীদের এই প্রতিবাদী হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) পবা উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এই প্রকল্পের সার্ভিস ম্যাপিং ও অ্যান্ড শেয়ারিং মিটিংয়ে এমন কথা জানিয়েছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
ব্র্যাকের সোশ্যাল কমপ্লায়েন্স প্রোগ্রাম আয়োজিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহরাব হোসেন। সভাটি পরিচালনা করেন অগ্নি প্রকল্পের কর্মকর্তা মিতা রানী সরকার।
সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোতাহার হোসেন, উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা হাবিবা খাতুন ও বায়া স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক এসএম মোশাররফ হোসেন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেকে কথা বলে নওহাটা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী ইসমে আজম, পুঠিয়াপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী মাবিয়া রহমান।
সভায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান, আগে বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার সময় বখাটেরা যৌন হয়রানি করলে ছাত্রীরা কাউকেই কিছু বলত না। এখন অগ্নি প্রকল্পের মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধির ফলে শিক্ষার্থীরা সবকিছুই শিক্ষকদের খুলে বলে। তখন শিক্ষকরা বখাটের মা-বাবাকে ডেকে কথা বলেন। সন্তানকে সতর্ক করার পরামর্শ দেন। পরে এমন ঘটনা ঘটলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন। ফলে এখন যৌন হয়রানির ঘটনা কমে গেছে।
সভায় জানানো হয়, অগ্নি প্রকল্পটি মূলত রাজশাহী জেলার স্থানীয় সরকার, জনপ্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং স্থানীয় সংগঠনকে সম্পৃক্ত করে মাধ্যমিক স্কুল ও মাদ্রাসা, গণপরিবহন, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম, স্থানীয় কমিউনিটিতে যৌন হয়রানি ও জেন্ডার ভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে গণসচেতনতা তৈরি, রিপোর্টিং ও প্রতিকার এবং প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো তৈরিতে কাজ করছে। সেই লক্ষ্যে উপজেলার ছয়টি স্কুলের ১ হাজার ২০০ শিক্ষার্থীদের সচেতনতামূলক সেশন, স্কুল পর্যায়ে যৌন হয়রানি কমিটি গঠন, ফলোআপ, কমিউনিটি পর্যায়ে অভিভাবক সভা ও টি-স্টল মিটিংয়ের মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ চলমান রয়েছে।
মন্তব্য করুন