গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বীজ কিনে প্রতারণার শিকার কৃষক, ১০ বিঘার ধানে চিটা

কৃষকের ১০ বিঘার ধানে চিটা। ছবি : কালবেলা
কৃষকের ১০ বিঘার ধানে চিটা। ছবি : কালবেলা

ভেজাল ‘ব্রি ধান-৩৯ জাতে’র ধানবীজ কিনে প্রতারণার শিকার হয়েছেন নাটোরের গুরুদাসপুরের কৃষক শফিকুল ইসলাম। মৌসুম শেষ হলেও তার ১০ বিঘার ধান এখন কাঁচা রয়ে গেছে। ধান পুরু না হয়ে ধীরে ধীরে শিসগুলো চিটা হয়ে যাচ্ছে। এতে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন তিনি।

উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের মাঝপাড়া বিলে কৃষক শফিকুলের ওই ধানের জমি। এ ঘটনায় তিনি প্রতিকার চেয়ে গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে ওই বীজ ভাণ্ডারের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা দিয়েছেন।

কৃষক শফিকুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, গুরুদাসপুর পৌর শহরের চাঁচকৈড় বাজারের ‘রহমান বীজ ভাণ্ডার’ থেকে ব্রি ধান-৩৯ জাতের ধান বীজ কিনেছি। পাশের জমিগুলোর লাগানো একই জাতের ধান কাটা শেষের পথে। অথচ আমার ১০ বিঘার জমিতে ১২০ দিন মেয়াদি এই ধান পাকছে না। কিছু গাছে শিস এলেও তা চিটা হয়ে যাচ্ছে। ব্রি ধান-৩৯ জাতের কথা বলে মিশ্রজাতের বীজ দিয়ে প্রতারণা করেন। এ জন্য আমি বীজ ভাণ্ডারের বিচার দাবি করছি।

কৃষক শফিকুলের বাবা মোজাহার আলী বলেন, ১০ বিঘা জমির জন্য বীজ ভাণ্ডার থেকে ব্রি ধান-৩৯ জাতের ৫২ কেজি বীজ কিনেছি। এর মধ্যে বিএডিসির ১০ কেজির দুই বস্তা ও রহমান বীজ ভাণ্ডারের নিজস্ব মোড়কের ১৬ প্যাকেট বীজ ছিল। বীজ বপণ থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত প্রতি বিঘায় অন্তত ১৩ হাজার টাকা করে ১০ বিঘায় ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ঠিকমতো ফলন হলে ১০ বিঘায় পেতাম ২০ মণ হারে অন্তত ২০০ মণ ধান। বর্তমান যে অবস্থা, ধান তো দূরে, কাটার খরচও ওঠা দায়। এদিকে ধান কাটতে না পেরে ওই ১০ বিঘায় রবিশস্য আবাদও করতে পারছি না। আমরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছি।

অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে রহমান বীজ ভাণ্ডারের স্বত্বাধিকারী আব্দুর রহমান সত্যতা স্বীকার করে কালবেলাকে মোবাইল ফোনে বলেন, কৃষক শফিকুলের কাছে বিএডিসির ব্রি ধান-৩৯ জাতের ৫২ কেজি ধান বীজ বিক্রি করেছি। তা ছাড়া আমার প্রতিষ্ঠানের নামে মোড়কীকরণ করে যে বীজ বিক্রি করেছি, সেগুলোও বিএডিসির। মূলত চলতি মৌসুমে বিএডিসির ব্রি ধান-৩৯ জাতের বীজে ভেজাল হওয়ায় কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এতে আমার কোনো হাত নেই।

গুরুদাসপুর ইউএনও সালমা আক্তার বলেন, বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখতে কৃষি অফিসকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

এদিকে কৃষি কর্মকর্তা হারুনুর রশীদ বলেন, ব্রি ধান-৩৯ জাতের ধান বীজ কিনে কৃষক শফিকুল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন মর্মে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।

জেলা বীজ প্রত্যয়ন কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, বিএডিসির ধানবীজ রহমান বীজ ভাণ্ডারের নিজস্ব মোড়কে বিক্রির সুযোগ নেই। বীজ কিনে কৃষক প্রতারণার শিকার হয়েছেন। এমন অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

নির্বাচন কমিশনকে স্বাগত জানাল খেলাফত মজলিস

জলবায়ু পরিবর্তনে সংকটে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কৃষি

একযুগ পর সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া, বসলেন ড. ইউনূসের পাশে

চট্টগ্রাম পলিটেকনিকে দুপক্ষের সংঘর্ষে ৩ শিক্ষার্থী আহত

কোনো পদে বা পক্ষে থাকতে চান না এহসানুল হক সমাজী

জয়কে অপহরণ চেষ্টা মামলা দণ্ডাদেশ স্থগিত চেয়ে প্রধান আসামির আবেদন

হিরু আলমের যাবজ্জীবন

গ্যাঁড়াকলে নেতানিয়াহু, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

এবার সম্পদের হিসাব দিতে হবে জবির শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের

কুয়েতে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপন

১০

কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না

১১

মাকে হত্যায় অভিযুক্ত সাদের জামিন নামঞ্জুর

১২

যথাযোগ্য মর্যাদায় নৌঅঞ্চলে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপিত

১৩

‘সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়াকে যে সম্মান জানিয়েছে, গোটা জাতি তাতে আনন্দিত’

১৪

হামলার শঙ্কায় ন্যাটোভুক্ত এক দেশ, ইউক্রেন সীমান্তে জোর প্রস্তুতি

১৫

নোয়াখালীতে ব্রি ধান ১০৩ ধানের মাঠ দিবস

১৬

তথ্য গোপন করে বাংলাদেশি নাগরিকত্ব নেওয়ার অভিযোগ 

১৭

পুলিশে বড় রদবদল

১৮

‘সাংবাদিকরা আমাদের নিয়ে লিখুন, ভুলগুলো ধরিয়ে দিন’

১৯

পেঁয়াজের দাম কমেছে, আলুরও কমবে : বাণিজ্য উপদেষ্টা

২০
X