সাভারে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে পরিবেশ ও মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর মাছ ও মুরগির খাদ্য তৈরি হচ্ছিল দীর্ঘদিন ধরে। অবৈধভাবে ট্যানারির বর্জ্য পুড়িয়ে তৈরি করা হচ্ছিল এসব খাদ্য।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে সাভার উপজেলার তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের হলমার্কের ভিতরের এলাকায় পরিত্যক্ত জায়গার এই কারখানাটিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের নজরে এলে সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু বকর সরকারের নির্দেশে সাভার উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম রাসেল ইসলাম নূরের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
স্থানীয়রা বলেন, দিনের পর দিন কারখানাটিতে ট্যানারির বিষাক্ত বর্জ্য রাতের আঁধারে পুড়িয়ে মাছ ও মুরগির খাদ্য তৈরি করে আসছিল একটি প্রভাবশালী চক্র। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের ম্যানেজ করেই চলতো এই অপকর্ম। উচ্চমাত্রার ক্রোমিয়ামযুক্ত ঝুট চামড়া যা টানারি কর্তৃপক্ষের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী নিষিদ্ধ তা থেকে এসব খাবার তৈরি হচ্ছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি কালবেলাকে বলেন, নিষিদ্ধ বর্জ্য পুড়িয়ে মুরগি খাদ্য ও মাছের খাদ্য তৈরির ফলে এলাকায় বিষাক্ত ধোঁয়া ও দুগন্ধে মানুষজন শ্বাসকষ্ট সহ নানা রোগে ভুগছে। সেই সাথে গাছপালা ও জীববৈচিত্র্যের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। তারা এতদিন (কারখানা মালিক) স্থানীয় প্রভাবশালী ও পুলিশকে ম্যানেজ করে এমন অপকর্ম চালিয়ে আসছিল। আজ অভিযান পরিচালনা করে উপজেলা প্রশাসন আমাদের বড় ধরনের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করেছে।
অভিযান পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম রাসেল ইসলাম নূর কালবেলাকে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আবুবকর সরকার স্যারের নির্দেশে অভিযান পরিচালনা করেছি।
অভিযানকালে ট্যানারির বর্জ্য পুড়িয়ে খাদ্য তৈরির কয়েকটি মেশিন ভেঙে ফেলা হয় ও ট্যানারির বর্জ্য আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। অভিযানের খবর পেয়ে কারখানার কর্মকর্তা কর্মচারীরা দ্রুত পালিয়ে যায়। এসব কারখানার মালিকদের বিরুদ্ধে আইগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অসাধু এই চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে এখানে অবৈধভাবে হাঁস, মুরগি ও মাছের খাবার তৈরি করে আসছিল, আমাদের লাইভস্টক কর্মকর্তা নিশিত করেছেন যা মানব দেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এ ধরনের ক্ষতির প্রোডাক্ট যাতে ভবিষ্যতে অন্য কেউ তৈরি করতে না পারে সেজন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
মন্তব্য করুন