শরীয়তপুরের জাজিরায় মুরগি নিয়ে তুচ্ছ বিরোধের জেরে নজরুল মাদবর নামে এক ব্যক্তি কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষরা। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও দুজন।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। জাজিরা থানার ওসি আল আমিন কালবেলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত নজরুল মাদবর (৪৫) জাজিরা পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম আড়াচন্ডি গ্রামের লতিফ মাদবরের ছেলে। এর আগে, শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) বেলা ৩টার দিকে জাজিরা পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম আড়াচন্ডি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, নজরুল মাদবরের বাড়ির মুরগির বাচ্চা প্রতিবেশী বোরহান মাদবরের বাড়িতে ঢুকে পড়ে। এ নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় বোরহানের সঙ্গে স্থানীয় আবু সালাম মাদবর, জলিল মাদবর, রাজন মাদবর ও মনু মাদবর ধারালো অস্ত্র নিয়ে নজরুলের ওপর হামলা চালায়। তাকে উদ্ধারে এগিয়ে গেলে নজরুলের বাবা লতিফ মাদবর ও ভাই সুমনকেও আহত করা হয়।
তারা আরও জানান, প্রতিবেশী হক মাদবরের সঙ্গে নিহতের পরিবারের সঙ্গে জমিসংক্রান্ত বিরোধ ছিল। এর জেরে হক মাদবরের ছেলেরা বোরহানের সঙ্গে মিলে তাদের কুপিয়ে জখম করে।
নিহতের স্ত্রী কল্পনা আক্তার বলেন, আমাদের বাড়ির মুরগির বাচ্চা বোরহানের বাড়িতে গেলে তারা আমার স্বামী নজরুলকে ডেকে নিয়ে গালাগাল শুরু করে। এতে প্রতিবাদ করলে তারা আমার স্বামীর ওপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। তখন আমি ওনাকে বাঁচাতে গেলে আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এরপর আমার দেবর ও শ্বশুর বাঁচাতে গেলে তাদেরও এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। যারা আমার স্বামীকে খুন করেছে আমি তাদের ফাঁসি চাই।
নিহতের ভাই জসিম মাদবর বলেন, আমি কাজের যাওয়ার সময় শুনতে পাই বোরহানের সঙ্গে আমার ভাই নজরুলের বাকবিতণ্ডা হচ্ছে। একপর্যায়ে আমাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন জমিসংক্রান্ত বিরোধের প্রতিপক্ষ হক মাদবরের ছেলেরা এসে বোরহানের সঙ্গে মিলে ধারালো অস্ত্র নিয়ে ভাইয়ের ওপর হামলা চালায়। এ সময় আমার ছোট ভাই ও বাবা এগিয়ে গেলে তাদেরও কুপিয়ে জখম করা হয়। আমি আমার ভাইয়ের হত্যাকারীদের সঠিক বিচার চাই।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর বোরহান ও হক মাদবরের ছেলেরা তাদের নিজেদের ঘর বাড়ি কুপিয়ে ঘরের মালামাল সরিয়ে নিয়ে যায়। এখনো তারা তাদের ঘরবাড়িতে থাকা মালামাল সরিয়ে নেওয়ার পাঁয়তারা করছে। পুলিশ প্রশাসনের কাছে অনুরোধ তারা যেন বিষয়গুলো খেয়াল রাখে।
জাজিরা থানার ওসি আল আমিন কালবেলাকে বলেন, মুরগি নিয়ে বিবাদের জেরে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে লতিফ মাদবর ও তার দুই ছেলে নজরুল মাদবর, সুমন মাদবর আহত হয়। পরে তাদের জাজিরা হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। নজরুল ও সুমন মাদবরের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার্ড করে চিকিৎসকরা। শনিবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ব্যাপারে মামলা পর যথাযথ আইনিব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন