ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ কমবেশি পরিচিত। প্রতি বছরই দুই একটা ছোট বড় ঘূর্ণিঝড় দেখা দেয় আমাদের অঞ্চলে। ইতোপূর্বে যতগুলো ঘূর্ণিঝড় হয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে বড় ঘূর্ণিঝড় হিসেবে ধরা হয় ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বরের সিডরকে। আজ সিডরের ১৭ বছর পূর্ণ হলো।
বরগুনার পাথরঘাটার তালিকা অনুযায়ী সিডরে ৩৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৯২ জন জেলে নিখোঁজ রয়েছে। অথচ আজ ১৭ বছরেও সুরক্ষিত হয়নি পাথরঘাটার বেড়িবাঁধগুলো। আজও নিহত এবং নিখোঁজ জেলেদের স্বজনরা নীরবে চোখের পানি ফেলে যাচ্ছেন।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) পাথরঘাটা উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত উপজেলা পরিষদ মাঠে সিডর দিবস উপলক্ষে সিডর স্মৃতিফলকে শ্রদ্ধা নিবেদন ও শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব রুকুনুজ্জামান খান, উপজেলা ভূমি সরকারি মো. এমদাদ হোসেন, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ ফারুক, পাথরঘাটা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি মির্জা শহীদুল ইসলাম খালেদ, সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম খোকনসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী, সামাজিক ও রাজনৈতিক দলের নেতারা।
২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর বাংলাদেশের উপকূল সিডরে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিল। অসংখ্য মানুষের প্রাণহানি, গবাদিপশু, কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। সেই সময় সরকারি হিসেবে পাথরঘাটায় ৩৪৯ জনের প্রাণহানি হয় এবং ৯২ জন জেলে নিখোঁজ হন। নিহত এবং নিখোঁজ ছেলেদের পরিবার আজও কোনো সহযোগিতা পায়নি। এখানে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে যেমন জিনতলা, হরিনঘাটা, পথটা ভাঙ্গল, রুহিতা, কালমেঘা, এসমস্ত স্থানের বেড়িবাঁধগুলো আজও সুরক্ষিত নয়।
সিডরে ক্ষতিগ্রস্ত মো. আব্দুল হালিম জানান, বেড়িবাঁধের উপরে আমার ঘর ছিল। সিডরে বেড়িবাঁধ ছুটে আমার ঘর ভাসিয়ে নিয়ে গেছে কোনো কিছুই রক্ষা করতে পারিনি। আজও সেই বেড়িবাঁধ সংস্কার হয়নি। ঘূর্ণিঝড়ের কথা শুনলেই মনের মধ্যে আতঙ্ক জেগে ওঠে।
এ বিষয়ে পাথরঘাটা পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বে থাকা মো. মামুন হোসেন জানান, আমরা পাথরঘাটায় বেড়িবাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ কিছু স্থান মেরামত করেছি। এখনো অনেক জায়গা রয়েছে যেসব স্থানে বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে কাজ করার জন্য ইতোমধ্যেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। অনুমোদন পেলে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারব।
পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুকুনুজ্জামান খান কালবেলাকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিডরে পাথরঘাটায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা এই অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়ে নিহত ও নিখোঁজ ছেলেদের জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করব।
মন্তব্য করুন