চট্টগ্রামের বাজারগুলোয় আসতে শুরু করেছে শীতের আগাম সবজি। তবে দাম কিছুটা বাড়তি থাকায় এখনই এসব সবজি কিনতে চাইছেন না ক্রেতারা। প্রয়োজন অনুসারে অল্প পরিমাণে কিনছেন অনেকেই। এ ছাড়াও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে আলু ও টমেটো। এতে বাজেটের সঙ্গে বাজার দরের মিল নেই বলে অভিযোগ করছেন ক্রেতারা।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের চকবাজার, কাজীর দেউড়ি ও আশপাশের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মুলা, শিম, বাঁধাকপি, ফুলকপিসহ শীতের বেশ কিছু আগাম সবজি বাজারে উঠেছে। খুচরা বাজারে এসব সবজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ১৪০ টাকার আশপাশে। এ ছাড়া ১৮০-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে টমেটো। আলু বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়।
এ ছাড়া পটোল, করলা, গাজর, কাঁকরোল, বেগুন, ঝিঙা, কচুমুখি, বরবটি —এসব সবজির দাম ৮০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে। অন্যান্য সবজির মধ্যে লাউ বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে। এ ছাড়া চালকুমড়া ও মিষ্টিকুমড়া ৬০ থেকে ৭০ এবং ঢ্যাঁড়স ও চিচিঙ্গা ৭০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে বিক্রি হয়েছে।
কাজীর দেউড়ি এলাকায় বাজার করতে আসা বেসরকারি চাকরিজীবী মোহাম্মদ মিজান বলেন, এক সপ্তাহ আগেও বাজারে শাক-সবজির দাম শুনে শূন্য হাতেই ফিরতে হয়েছে। তবে এখনও স্বস্তি ফেরেনি মনে। ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুনসহ অধিকাংশ সবজি এখনো ৭০ থেকে ১০০ টাকার আশপাশে। আলু ও টমেটোর দামও চড়া। কয়েক পদের সবজি কিনতে চাইলেও কিনতে হচ্ছে দুই-এক পদ।
ক্রেতা শাহ আলম বলেন, বাজেটের দরে সবজি পাওয়া যাচ্ছে না বাজারে। বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে। পঞ্চাশ টাকার নিচে সবজি পাওয়া মুশকিল।
দেখা যায়, প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায় যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০ টাকা। তবে নতুন আলুর দাম কমেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ১০০ টাকা কমে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কাজীর দেউড়ি বাজারের সবজির আড়তদার মোহাম্মদ আজম কালবেলাকে বলেন, সরবরাহ কমে যাওয়ায় সবজির দাম বাজারে অনেক বেশি। দুই-এক সপ্তাহের মধ্যে দাম কিছুটা কমতে পারে।
তিনি বলেন, সরবরাহ বাড়লে দাম কমে। নতুন আলুর সরবরাহ কমে যাওয়ায় সবজির বাজারে দাম বেশি। আর টমেটোর ক্ষেত্রে দেশি টমেটোর উৎপাদন কম। বেশিরভাগ টমেটো বাঁশখালী, সীতাকুন্ড ও হালিশহর থেকে আসে। এছাড়া বন্যা ও বৃষ্টির প্রভাবও রয়েছে।
আড়তে প্রতি কেজি ফুলকপি ১৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০, বেগুন ৯০ টাকা, মুলা ৭০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৩৫ টাকা, ঢ্যাঁড়স ও ঝিঙে ৫০ থেকে ১০০ টাকা, ৬০ টাকা কমে কাচা মরিচ ১০০ টাকায় এবং ধনে পাতা ১০০ টাকা, শিম ১৪০, পটল ৮০, করলা ১২০, কাঁকরোল ২০০ ও বেগুন ৯০ বিক্রি হয়েছে।
এর আগে ২২ দিন সাগরে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা ছিল, এতে বাজারে মাছের সরবরাহও কমেছে। যেসব মাছ বাজারে পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলোর দামও বাড়তি। তাই ক্রেতাদের মধ্যে এসব মাছের চাহিদা কিছুটা কম।
বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, কোরাল আকারভেদে প্রতি কেজি ৫০০, রুই ৩০০, কাতলা ৩৩০-৩৫০, পাঙাশ ২০০, পোয়া ৩৫০, তেলাপিয়া ২২০, মাগুর ৬০০ ও মিশালি মাছসমূহ ৬৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এসময় মাছ কিনতে আসা ব্যবসায়ী জসীম উদ্দিন বলেন, বাজারে অধিকাংশই হিমায়িত মাছ বিক্রি হচ্ছে। চাষের কিছু মাছ তাজা পাওয়া যাচ্ছে। গত সপ্তাহের চেয়েও আজ দাম কম হলেও স্বস্তি নেই। কোরাল মাছ নিয়েছি এক কেজি, তা–ও দাম বাড়তি।
মন্তব্য করুন