সরকারের ভুল-ত্রুটির কারণেই ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহতদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে বলে মনে করছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সকালে ঢাকার সাভারে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটে কর্মকর্তাদের সাথে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এসব বিষয়ে কথা বলেন তিনি।
এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের প্রথমে মাথায় রাখতে হবে যে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, বা এই যে আমরা একটা বিপ্লব পেলাম বা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে একটা জয় হলো, আমরা একটা নতুন বাংলাদেশ পেলাম।
এতে যেমন শহীদদের অবদান আছে, তেমনি যারা এখনো আহত হয়ে পঙ্গু হাসপাতালে, চক্ষু হাসপাতালে, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে এবং মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন আছেন, তারাও কিন্তু সেই জুলাই মাস থেকে, এই যে ৩-৪ মাস হয়ে গেছে এবং তারা কখন সুস্থ হবেন, বিশেষ করে আমরা পঙ্গুতে যা দেখলাম, আরও ৬-৮ মাস লেগে যেতে পারে পা ঠিক হতে, হাত ঠিক হতে। কাজেই সেদিক থেকে আমার মনে হয়, যদিও সরকারের একান্ত চেষ্টা ছিল সঠিক চিকিৎসা দেওয়া, কিন্তু ওদের (আহতদের) মনে যে একটা ক্ষোভ রয়েছে, আমরা মনে করি যে, আমাদের তাদের দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি দেখা দরকার। নিশ্চয়ই কোনো ভুল-ত্রুটি আমাদের দিক থেকে হয়েছে, আমি একেবারেই বলব না যে হয়নি। কারণ হয়তো বা বেশি চারদিকে দেখতে গিয়ে সেটা কোনোভাবে ভুল হয়ে যেতে পারে। তাদের মধ্যে যে ক্ষোভটা সৃষ্টি হয়েছে, সেজন্যই তারা রাস্তায় নেমে এসেছে।
তিনি আরও বলেন, হাত-পা ওই অবস্থায়, ব্যান্ডেজ অবস্থায় যে তারা রাস্তায় ছিল, এটা দেখে আমরা থাকতে পারিনি। এজন্য আমরা কয়েকজন উপদেষ্টা রাতে সেখানে গিয়েছিলাম। ভোররাত পর্যন্ত আমি ক্ষুব্ধ চিকিৎসাধীন আহতদের সঙ্গে কথা বলেছি। নানা জটিলতার কারণে আহতদের অনেকেই এখনো ক্ষতিপূরণ পাননি, সেটির দ্রুত ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
আহতদের দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাদের দাবি হলো যে তারা শুধু চিকিৎসা চাচ্ছে তা নয়, এমনও অনেকে আছেন তাদের মধ্যে যারা পরিবারের একমাত্র উপার্জনশীল মানুষ ছিলেন। তাদের পরিবারগুলো, এমনকি কেউ কেউ আছেন যারা ঋণ নিয়েছেন; ঋণের কিস্তির জন্য তাদের বাড়িতে এসে ধর্না দেয়। তারা সেই টাকা কোথায় পাবে? তাদের পুনর্বাসনের ব্যাপারটা তারা চাচ্ছেন। আমরা মনে করি যে এটি খুবই যৌক্তিক একটি দাবি। এবং এটার জন্য আজকে দুপুরে আমরা সবাই মিলে বসলে আশা করছি যে একটা সমাধানে আমরা অবশ্যই আসতে পারব।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের প্রতি কোনো গাফিলতি কাম্য নয় জানিয়ে এই উপদেষ্টা বলেন, আমি মনে করি যে সবাই তাদের জন্য দোয়া করবেন যাতে তারা দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে। তাদের প্রতি আমাদের ঋণ অনেক বেশি থাকবে এবং তাদের প্রতি কোনো গাফিলতি হোক, এটা আমরা কোনোভাবেই চাই না।
মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাকিলা ফারুক। এ সময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব শাহীনা ফেরদৌসীসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন