কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ৮ বাসযাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার মামলায় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) শহিদুল হক ও যুগ্ম সচিব কিবরিয়াসহ তিনজনকে দুদিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। বুধবার (১৩ নভেম্বর) বিকেলে কুমিল্লা আদালতে হাজির করা হলে সিনিয়র চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারহানা সুলতানা এ আদেশ দেন।
প্রথম দফায় দুই দিনের রিমান্ড শেষে সাবেক আইজিপিসহ তিন আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে তদন্ত কর্মকর্তা চৌদ্দগ্রাম থানার উপপরিদর্শক মশিউর আলম আসামিদের আরও ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। বিচারক দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে সাবেক আইজিপি ও সাবেক যুগ্ম সচিবের আদালতে উপস্থাপনা নিয়ে অতিরিক্ত নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। সেনাবাহিনী ও পুলিশের অতিরিক্ত সদস্যরা এ সময় নিরাপত্তায় নিয়োজিত ছিল। অভিযুক্ত সাবেক আইজিপি ও সাবেক যুগ্ম সচিবকে দুপুর ২টায় আদালতে আনার কথা থাকলেও প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর তাদের হাজির করা হয়।
শুনানি শেষে কুমিল্লা আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) কাইমুল হক রিংকু বলেন, ‘মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাবেক আইজিপি শহিদুল হক, সাবেক যুগ্ম সচিব গোলাম কিবরিয়া ও জহিরুল ইসলাম সেলিম নামে একজনের আবারো ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত ফের দুদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।’
পিপি কাইয়ুম হক রিংকু আরও বলেন, ‘মামলায় অভিযুক্তদের সাধারণ অভিযুক্ত হিসেবে আমলে নিয়েই কার্যক্রম পরিচালনার দাবি জানাই। মামলায় যারা আরও আসামি রয়েছে তাদেরও গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।’
২০১৫ সালে ৩ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের জগমোহনপুরে আইকন পরিবহনের একটি বাসে একটি পেট্রোলবোমা নিক্ষেপের ঘটনায় আটজনের মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় তৎকালীন পুলিশের দায়ের করা মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ ৬৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলা করে তৎকালীন পুলিশ।
তবে ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর ১১ সেপ্টেম্বর কুমিল্লা আদালতে একই ঘটনায় পাল্টা মামলা দায়ের করেন নাশকতাকবলিত ওই বাসটির তত্ত্বাবধায়ক পরিচয়দানকারী আবুল খায়ের। বর্তমান মামলায় সাবেক রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক, সাবেক আইজিপি শহিদুল হক, র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ, কুমিল্লার সাবেক পুলিশ সুপার টুটুল চক্রবর্তীসসহ ১৩০ জনের নামোল্লেখসহ অন্তত ১৯০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে চৌদ্দগ্রাম ওসিকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
মন্তব্য করুন