১৩ বছরের সাজ্জাদের কোলে ফুটফুটে এক কন্যাশিশু। সাত বছরের ফারিয়ার কোলে আরেকজন। যমজ এই শিশুরা সাজ্জাদ-ফারিয়ার ছোট বোন। মাসখানেক আগে তারা পৃথিবীতে আসে। কিন্তু জন্মের এক সপ্তাহের মাথায় হারায় মাকে। বাবা বর্তমানে কারাবন্দি।
দুই শিশুসহ ছোট তিনবোনকে নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছে শিশু সাজ্জাদ। এ অবস্থায় চার শিশুই খেয়ে না খেয়ে মানবেতর দিন পার করছে। ঘটনাটি গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার চিত্রাপাড়া গ্রামের।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এক মাস আগে জামাল মিয়ার স্ত্রী সাথি বেগম একসঙ্গে দুই কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। তার সাত দিন পর তার মৃত্যু হয়। এরপর চার সন্তানের লালনপালন করছিলেন জামাল মিয়া। তার বড় ছেলে সাজ্জাদ এম এম খান উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র।
গত শুক্রবার রাতে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা দিদার হত্যা মামলায় জামালকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায় কোটালীপাড়া পুলিশ। পরে গোপালগঞ্জ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয় জামালকে। গত শনিবার জামালকে কারাগারে পাঠানো হয়।
সাজ্জাদ কালবেলাকে জানায়, কদিন পরই বার্ষিক পরীক্ষা। এখনই আমার স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। এত ছোট বোনদের কেমনে যত্ন নেব। রান্নাও তো করতে পারি না।
তার চাচা মনির মিয়া বলেন, আমার ভাই বর্তমানে কোনো দলের সঙ্গে জড়িত নয়। একসময় আমতলী ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ছিল। পুলিশ কী কারণে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে জেলে পাঠিয়েছে জানা নেই।
তিনি আরও বলেন, ভাইয়ের প্রথম সন্তান সাজ্জাদ সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। দ্বিতীয় সন্তান ফারিয়া প্রথম শ্রেণিতে। এ ছাড়াও এক মাস বয়সী আরও দুই মেয়ে আছে। তাদের সঙ্গে আমার বৃদ্ধ মায়ের দেখাশোনাও করত আমার ভাই। দ্রুত আমার ভাইয়ের মুক্তি চাই।
কোটালীপাড়া থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ঢাকার তেজগাঁও থানা শ্রমিক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন জামাল মিয়া। সে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা দিদার হত্যা ঘটনায় জড়িত। সেজন্য তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলে পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন