ভারতে অনুপ্রবেশ করে ৮ বছর আগে রাজমিস্ত্রির কাজ করতে যান চাঁপাইনবাবগঞ্জের মাসুদ রানা। সেখানে গিয়ে তিনি একটি বাসায় ভাড়াটে হিসেবে ওঠেন। একসময় সেই বাড়ির শাবনুর (১৭) নামে এক গৃহবধূর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। গত ১৪ অক্টোবর ওই কিশোরী মাসুদের সঙ্গে বাংলাদেশে চলে আসে। এরপর তারা বিয়ে করে সংসার শুরু করেন।
সোমবার (১১ নভেম্বর) ভারতীয় ওই কিশোরীর সঙ্গে মাসুদের বিয়ের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য মো. নাসিম।
মাসুদ রানা চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নের গোঠাপাড়া গ্রামের আনারুল ইসলামের ছেলে। ওই কিশোরী ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তপন থানার মান্দাপাড়ায় ইসমাইল হকের স্ত্রী।
স্থানীয়ভাবে জানা যায়, ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুরে ওই কিশোরীর শ্বশুরবাড়িতেই ভাড়া থাকতেন মাসুদ। এতে দুজনের দেখা, কথাবার্তা হতো। একদিন তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একপর্যায়ে গৃহবধূর স্বামী বিষয়টি জানতে পেরে মাসুদকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। এরপর সুযোগ বুঝে কিশোরীকে বিএসএফ-বিজিবির চোখ ফাঁকি দিয়ে বাংলাদেশে নিয়ে আসে মাসুদ। পরে কিশোরীর নাম পরিবর্তন করে তারা বিয়ে করে।
এদিকে ১৪ অক্টোবর স্ত্রীকে ফিরে পেতে ভারতের সংশ্লিষ্ট থানায় জিডি করেন ইসমাইল হক। জিডিতে তিনি বলেন, প্রলোভন দেখিয়ে ফাঁদে ফেলে তার স্ত্রীকে বাংলাদেশে নিয়ে এসেছেন মাসুদ। আটকে রেখে নির্যাতন করেছেন তার স্ত্রীকে। এমনকি ভারতে যেতে চাইলেও কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয় না। এ অবস্থায় স্ত্রীকে ফিরে পেতে আবেদন জানান ইসমাইল।
এ বিষয়ে স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, ভারতের দিনাজপুর সীমান্ত দিয়ে কাঁটাতারের বেড়া পার হয়ে প্রায় ৪০ দিন আগে উপজেলার চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নের গোঠাপাড়ায় মাসুদ ওই কিশোরী গৃহবধূকে নিয়ে যায় আসেন বাড়িতে। পরে তারা বিয়ে করেন। মাসুদ আট বছর আগে ভারতে অনুপ্রবেশ করেন। দীর্ঘদিন সেখানে রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। ভারতে অবাধে চলাফেরার জন্য অবৈধভাবে বানিয়েছিলেন ‘আধার কার্ড’।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ ৫৩-বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মনির-উজ-জামান বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে অবৈধভাবে ভারতের কোনো নাগরিকের থাকার সুযোগ নেই। বিষয়টি তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে সদর থানার ওসি এস এম জাকারিয়া কালবেলাকে জানান, এ ধরনের ঘটনা জানা নেই। তবে এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করলে অথবা মেয়েটির পরিবারের অভিযোগ রাষ্ট্রীয়ভাবে জানানো হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন