সিলেট ব্যুরো
প্রকাশ : ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২৮ পিএম
আপডেট : ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

শিশু মুনতাহা হত্যায় চার আসামি ৫ দিনের রিমান্ডে

সিলেট শিশু মুনতাহা হত্যায় গ্রেপ্তার আসামিরা আদালতে। ছবি : কালবেলা
সিলেট শিশু মুনতাহা হত্যায় গ্রেপ্তার আসামিরা আদালতে। ছবি : কালবেলা

সিলেটের কানাইঘাটে শিশু মুনতাহা আক্তার জেরিন (৫) হত্যায় মামলায় গৃহ শিক্ষিকাসহ (সাবেক) চার জনকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ। রহস্য উদঘাটনের পাশাপাশি এ হত্যার সঙ্গে আরও কারও সংশ্লিষ্টতা আছে কি না সেটি খতিয়ে দেখতে আদালতে আসামিদের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

সোমবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে বাদী পক্ষের আইনজীবীরা ৭ দিনের রিমান্ড চাইলে সিলেট জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক কাজী মো. আবু জাহের বাদল ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে মুনতাহার বাবা শামীম আহমদ শনিবার (৯ নভেম্বর) কানাইঘাট থানায় অজ্ঞাতনামাদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি অপহরণ মামলা করেন। এরপর থেকেই পুলিশ সন্দেহভাজনদের ওপর নজরদারি বাড়ায়।

আটক ব্যক্তিদের ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। নিহত মুনতাহা কানাইঘাট সদরের বীরদল ভাড়ারিফৌদ গ্রামের শামীম আহমদের মেয়ে।

গ্রেপ্তার হওয়ারা হলেন কানাইঘাট থানার বীরদল ভাড়ারীফৌদ গ্রামের মৃত ময়না মিয়া আলিফজান (৫৫) ও তার মেয়ে শামীমা বেগম মার্জিয়া (২৫), একই এলাকায় ইসলাম উদ্দিন (৪০) ও নাজমা বেগম (৩৫)।

কানাইঘাট থানার ওসি আব্দুল আউয়াল জানান, মামলার তদন্তের স্বার্থে আসামিদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যাকাণ্ডের পেছনে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) রফিকুল ইসলাম বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা হত্যার কথা স্বীকার করেছে। তাদের মাধ্যমে ঘটনার পুরো প্রক্রিয়া সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা চলছে। আরও কয়েকজনের নাম এসেছে, যাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।

রোববার (১০ নভেম্বর) ভোরে মাটিতে পুঁতে ফেলা লাশ তুলে মুনতাহার চাচার বাড়ির পুকুরে ফেলার সময় হাতেনাতে গৃহশিক্ষিকার মাকে আটক করেন স্থানীয়রা। এ সময় গলায় রশি পেঁচানো অবস্থায় মুনতাহার লাশ দেখতে পান স্বজনরা।

মুনতাহা আক্তার জেরিন উপজেলার সদর ইউনিয়নের বীরদল গ্রামের ভাড়ারিফৌদ গ্রামের শামীম আহমদের মেয়ে। গ্রেপ্তার তিনজনই মুনতাহার প্রতিবেশী।

স্থানীয়রা জানান, শনিবার (৯ নভেম্বর) রাতে সন্দেহজনকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শিশু মুনতাহার গৃহশিক্ষিকা শামীমা বেগম মার্জিয়াকে থানায় নেয় পুলিশ। এ সময় তার আচরণ সন্দেহজনক মনে হলে মার্জিয়ার বাড়িতে মুনতাহার সন্ধানে তল্লাশি চালান স্থানীয়রা। রাত সাড়ে ৩টার দিকে মার্জিয়ার বাড়ির আশপাশে তল্লাশি চালানোর একপর্যায়ে মার্জিয়ার মা আলিফজান বিবিকে অন্ধকারের মধ্যে রাস্তা পার হতে দেখেন। এ সময় তাকে আটকাতে চাইলে তিনি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এ সময় স্থানীয়রা কাদামাটি মাখা মুনতাহার লাশ দেখতে পান। পরে মার্জিয়ার মাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন স্থানীয়রা।

কানাইঘাট সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আফসার উদ্দিন আহমদ বলেন, মুনতাহার নিখোঁজের পর থেকে পুলিশ আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছিল। কিন্তু কোনো ক্লু পাচ্ছিল না। শনিবার স্থানীয় সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গেলে মার্জিয়ার আচরণ সন্দেহজনক মনে হয়। পরে রাতে পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়। এরপর স্থানীয় ইউপি সদস্যকে মার্জিয়ার বাড়ির আশপাশে মাটি খোঁড়া আছে কি না খোঁজ নিতে বলেন।

তিনি বলেন, মুনতাহার স্বজনসহ স্থানীয়রা রোববার রাতভর মাটিখোঁড়া কোনো জায়গা আছে কি না খুঁজতে থাকেন। ফজরের আজানের আগ মুহূর্তে মার্জিয়ার মা আলিফজান বিবিকে হঠাৎ অন্ধকারের মধ্যে রাস্তা পার হতে দেখেন। এ সময় তিনি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে স্থানীয়রা তাকে আটক করেন। পরে কাদামাটি মাখা মুনতাহার লাশ দেখতে পান। আটকের পর তিনি জানান, লাশ প্রথমে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়েছিল। রাতে সেখান থেকে মরদেহ তুলে মুনতাহার চাচার বাড়ির পুকুরে ফেলতে চেয়েছিলেন তিনি।

চেয়ারম্যান আরও বলেন, মার্জিয়া মুনতাহার প্রতিবেশী। একসময় ভিক্ষা করতেন মার্জিয়ার মা ও নানি। মুনতাহাকে বাড়িতে পড়াতেন মার্জিয়া। মার্জিয়াকে তার স্বামী ছেড়ে চলে গেছেন। ফলে বাড়ির বাইরে গেলে মুনতাহাকে সঙ্গে নিতেন মার্জিয়া। সবাই তাকে বিশ্বাসও করতেন। তবে কী কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে তা জানা যায়নি। সম্প্রতি মার্জিয়ার পরিবারের সঙ্গে তাদের বিরোধ চলছিল বলে জানতে পেরেছি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

স্ত্রী চলে গেছে আতাউরের সঙ্গে, শোকে জুয়েলের বিষপান

পাঁচ দেশে গমনেচ্ছু বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা

চীনের বিশাল খনিতে কী পরিমাণ সোনা আছে?

রাজউক কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব দিতে হবে 

আ.লীগ নিজেরাই নিজেদের পতন ডেকে এনেছে : জামায়াত আমির

রিমান্ড শেষে কারাগারে আতিক-আলেপ-ফারুকী

মেজর জলিলের মরণোত্তর ‘বীরউত্তম’ খেতাব চান রব

ঠাকুরগাঁও জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা

‘উন্নয়নের নামে কোটি কোটি টাকা অপচয় করেছে বিগত সরকার’

পেসারদের দাপটে পার্থে ভাঙল ৭২ বছরের রেকর্ড

১০

সীমান্তে সোয়া কোটি টাকার চোরাই পণ্য আটক

১১

হঠাৎ ভয়ংকর টর্নেডো, কুড়িগ্রামে আতঙ্ক

১২

ফিলিস্তিনের লড়াকু মানসিকতায় মুগ্ধ সন

১৩

ভিসা দেওয়া না দেওয়া ভারতের নিজস্ব ব্যাপার : উপদেষ্টা হাসান আরিফ

১৪

ম্যাচ ড্র হলে ভীষণ বিরক্ত হন মেসি, কিন্তু কেন?

১৫

হারপুন লিক্যুইডের সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন 

১৬

নিলামের আগে আইপিএলের দলগুলোকে যে বার্তা দিল বিসিবি

১৭

বগুড়ায় অস্ত্র নিয়ে কৃষক লীগ নেতা ধরা

১৮

রংপুরে বীজ আলুর সংকট, দিশাহারা কৃষক

১৯

শুধু জিয়াউর রহমানের নাম থাকায়...

২০
X