আওয়ামী সরকারের পতনের দিন রাজশাহী নগরের আলুপট্টি মোড়ে গুলির সামনে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল ছাত্র-জনতা। পুলিশ আর যুবলীগের গুলিতে সেদিন গুলিবিদ্ধ হন অর্ধশতাধিক। প্রাণ হারান দুই ছাত্র। এর কিছুক্ষণ পরই খবর আসে, পতন ঘটেছে আওয়ামী লীগ সরকারের। তাই রাজশাহী নগরীর এই আলুপট্টি মোড়ের নাম রাখা হলো ‘বিজয়ের মোড়’।
রোববার (১০ নভেম্বর) বিকেলে আলুপট্টি মোড়ে বিপ্লব ও সংহতি দিবসের এক সমাবেশে এ ঘোষণা দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের অন্যতম উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু।
জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের রাজশাহী জেলা ও মহানগর কমিটি এই সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে রাজশাহীর সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক সিটি মেয়র মিনু বলেন, ৫ আগস্ট রাজশাহীর তিন সন্তান শাহাদাতবরণ করেছে। এখনো একজন গুম হয়ে আছে। আজ থেকে এই মোড়ের নাম— বিজয়ের মোড়।
তিনি বলেন, রাজশাহীর তথাকথিত চোর, বাটপার, ভূমিদস্যু, বালুবাবা—তাদের গডফাদার ছিল অ্যাডভোকেট লিটন (সাবেক সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন)। আর এখানকার একজন গডফাদার ছিল ডাবলু (নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার)। তাদের আগামী দিনেও বিচারের আওতায় আনা হবে এবং এই মোড়ের নাম দেওয়া হলো বিজয়ের মোড়।
মিনু বলেন, যারা বীরের বেশে সেদিন খুনি হাসিনার দালালদের সামনে দাঁড়িয়েছিল ,তারা জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ সন্তান। তাদের বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল সর্বশ্রেষ্ঠ সম্মান দিয়েছে। যেই জাতি তার বীরদের সম্মান দেয় না, সেই জাতি কোনোদিনই মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে না। তাই এই বিজয়ের মোড় আমরা উৎসর্গ করলাম আমাদের বীর শহীদদের। তাদের নামেই আমরা স্মৃতিচিহ্ন রাখব। কোনোরকম ভাস্কর্য-মূর্তি আমরা বানাব না। আমরা তাদের নাম লিপিবদ্ধ করে রাখব, যেন হাজার বছর ধরে তারা মানুষের হৃদয়ে টিকে থাকে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে মিনু বলেন, হাসিনা তোমার ভারত থেকে বাংলাদেশে আসার কোনোই সুযোগ নাই। তোমার যে সব তাবিদার, দালালরা বাংলাদেশকে আষ্টিত করতে চেয়েছিল। তারা যদি নদীর ওপাড় থেকে নিশানা করে গুলি করে তবুও ভয় নেই। ১৬ কোটি মানুষ বুক পেতে দেবে। হাসিনা তোমার বিদায়ের সময় যেমন ৯৮৭ জন বুক পেতে দিয়েছে। প্রয়োজনে ১৬ কোটি মানুষ বুক পেতে দেবে মনে রেখ।
এর আগে নগরীর বাটার মোড় থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। এতে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের জেলা-মহানগরের নেতাকর্মী ছাড়াও বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। শোভাযাত্রাটি রাজশাহী কলেজের সামনে দিয়ে মনিচত্বর, সাহেববাজার হয়ে আলুপট্টি মোড়ে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মুক্তিযোদ্ধা দলের রাজশাহী জেলার আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম খোকা। অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন, নগর যুবদলের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সুইট, সাবেক আহ্বায়ক আব্দুল কাদের বকুল, নগর যুবদলের সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম রবি প্রমুখ।
মন্তব্য করুন