নেত্রকোনা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১০ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

পুলিশের গুলিতে দৃষ্টি হারানো বারেকের চিকিৎসা বন্ধ

আন্দোলনে চোখ হারানো আব্দুল বারেক। ছবি : কালবেলা
আন্দোলনে চোখ হারানো আব্দুল বারেক। ছবি : কালবেলা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দৃষ্টি হারানো আব্দুল বারেকের চিকিৎসা বন্ধ হয়ে গেছে। টাকার জোগাড় না হলে আর চিকিৎসা হবে না তার।

বারেক মিয়া নেত্রকোনার মদন উপজেলার চানগাও ইউনিয়নের চকপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল গণি মিয়ার ছেলে। বারেক মিয়ার তিন ছেলে ও এক মেয়ে আছে।

জানা গেছে, গত ১৮ জুলাই প্রতিদিনের মতো কাজে বের হয়েছিলেন দিনমজুর আব্দুল বারেক (৬৫)। হঠাৎ শুনতে পান পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ চলছে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তার নাতি মেহেদী হাসানও আন্দোলনে যোগ দিয়েছে। নাতিকে খুঁজতে চলে যান সংঘর্ষের স্থানে। এ সময় পুলিশের ছোড়া ছররা গুলি এসে লাগে আব্দুল বারেকের চোখসহ শরীরের নানা অংশে। আশপাশের লোকজন তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যান মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহে পাঠানো হয়।

দীর্ঘদিন ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরলেও পুলিশের গুলিতে বারেকের এক চোখ একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে। অপর চোখটিও নষ্টের পথে। ব্যথায় যন্ত্রণায় বিছানায় ছটফট করে জীবন কাটছে তার। এ পর্যন্ত লাখ টাকা ধারদেনা করে চিকিৎসা করালেও টাকার অভাবে বর্তমানে তার চিকিৎসা বন্ধ রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বারেক মিয়া তার স্ত্রীকে নিয়ে আলাদাভাবে বাস করেন। দিনমজুরি কাজ করে প্রতিদিন যা রোজগার হতো তা দিয়েই সংসার চলত তার। বর্তমানে তিনি নিজ বাড়িতেই অবস্থান করছেন। চিকিৎসার জন্য ধারদেনা করে খরচ করেছেন প্রায় লাখ টাকা। একটি চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। এখন বাকি চোখটাও নষ্টের পথে। চিকিৎসক জানিয়েছে নষ্ট চোখ তুলে ফেলতে হবে। নয় তো বাকি চোখটাও দ্রুত সময়ের মধ্যে নষ্ট হয়ে যাবে। কিন্তু চোখ তোলার জন্য অস্ত্রোপচারের টাকা নেই।

আব্দুল বারেক বলেন, নাতিকে খুঁজতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে চোখ হারিয়েছি। আহত হওয়ার পর থেকে কাজকর্ম করতে পারি না। চিকিৎসার জন্য লাখ টাকা ঋণ করেছি। একটা চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। ডাক্তার বলেছে নষ্ট চোখ তুলে ফেলতে হবে। কিন্তু টাকার অভাবে তা করা চোখ তোলা সম্ভব হচ্ছে না। এখন ভালো চোখেও ব্যথা শুরু হয়েছে। সময় মতো চোখ তুলতে না পারলে ভালো চোখও নষ্ট হয়ে যাবে।

মদন উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও চানগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূরুল আলম তালুকদার জানান, ১৮ জুলাই পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের স্থানে আব্দুল বারেক গুলিবিদ্ধ হয়। তার চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। বর্তমানে বারেকের পরিবার খুবই কষ্টে দিনযাপন করছে। আব্দুল বারেক ছাড়াও উপজেলায় আরও অনেক লোকজন আহত হয়েছেন। আমরা আহতের তালিকা তৈরি করে কেন্দ্রে পাঠিয়েছি। আহতরা যাতে সহযোগিতা পায় তার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মোটরসাইকেল-নসিমন সংঘর্ষে দুই মাদ্রাসাছাত্র নিহত

পুলিশের ঊর্ধ্বতন ২৮ কর্মকর্তাকে বদলি

আজ ১৩ নভেম্বর, ইতিহাসের এই দিনে কী ঘটেছিল

১৩ নভেম্বর : আজ টিভিতে দেখা যাবে যেসব খেলা

বুধবার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ

১৩ নভেম্বর : আজকের নামাজের সময়সূচি

সিলেট সীমান্ত দিয়ে ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টা, ৪ নারী আটক

চবিতে ‘বই বিনিময় উৎসব’, পরিবেশ সুরক্ষায় সচেতনতার বার্তা শিক্ষার্থীদের

বগুড়া কারাগারে আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু

কৃষক লীগ নেতা গ্রেপ্তার

১০

চলন্ত গাড়িতে ডাকাতির লোমহর্ষক বর্ণনা

১১

৯৯৯-এ ফোন, নিখোঁজ হওয়া শিশু উদ্ধার

১২

টিম গেমে টিমম্যান কোথায়

১৩

ভারতীয় হাইকমিশনের আয়োজনে নজরুলের শ্যামাসংগীত অনুষ্ঠিত

১৪

ঢাবির ৩টি গবেষণা প্রকল্পের ফলাফল উপস্থাপন

১৫

এবার সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকেও সরানো হলো শেখ মুজিবের ছবি

১৬

সাভারে বিএনপি নেতার ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ, থানায় অভিযোগ

১৭

ইউক্যালিপটাস ও আকাশমনি গাছ না লাগানোর নির্দেশ

১৮

রাজবাড়ীতে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

১৯

জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য পর্যাপ্ত সহায়তা প্রয়োজন : প্রধান উপদেষ্টা

২০
X