নওগাঁর বদলগাছীতে বেলাল হোসেন সৌখিন নামে এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে মামলার আসামির তালিকা থেকে নাম বাদ দিতে আওয়ামী লীগ নেতার কাছ থেকে চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে।
বেলাল হোসেন সৌখিন উপজেলা বিএনপির সহযুব সম্পাদক। উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক অর্থ সম্পাদক শামসুল আলম খানের কাছে তিনি এ চাঁদা দাবি করেন।
বুধবার (৬ নভেম্বর) এ-সংক্রান্ত ১ মিনিট ৩৭ সেকেন্ডের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
রেকর্ডে শোনা যায়, শামসুলকে সৌখিন বলছেন- ‘মানিককে আপনি টাকা দিয়েছেন, কিন্তু সে কি আপনাকে বাঁচাতে পারবে? জবাবে শামসুল বলেন, বাঁচা মরা আল্লাহর হাতে। তখন সৌখিন বলেন, কিন্তু আল্লাহ তো আমার হাতে লিখে রেখেছে। আপনি মানিকের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন তাতে তো আমার ভাগ মিলছে না। আমার এই নম্বরে এক লাখ পাঠায়ে দেন।’
বিষয়টির নিন্দা জানিয়ে বদলগাছী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আওরঙ্গজেব চৌধুরী মানিক কালবেলাকে বলেন, আমি আমার দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় দেখব।
জানতে চাইলে বিএনপি নেতা বেলাল হোসেন সৌখিন কালবেলাকে জানান, ঘটনাটি অনেক আগের। উপজেলা পরিষদ বাতিল হওয়ার পর জানতে পারি স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মানিককে ১ লাখ টাকা দেওয়ার খবর পাই, সেই জন্যই আমিও তাকে ফোন করে বলেছি মানিককে দিলে আমাকেও দুই লাখ টাকা দিতে হবে।
বদলগাছীর সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সামছুল আলম খান বলেন, বিএনপি নেতা সৌখিন আমার কাছে ফোন করে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়। আমি টাকা দিতে অস্বীকার করার কারণে গোবরচাঁপা হাটে ঘটে যাওয়া ককটেল বিস্ফোরণের মামলায় আমাকে ১০নং আসামি করা হয়। এতেই প্রমাণিত এটি একটি সাজানো মিথ্যা মামলা। আমি এর প্রতিবাদসহ সঠিক বিচার দাবি করছি।
বদলগাছী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাদি চৌধুরী টিপু কালবেলাকে বলেন, ওই কল রেকর্ডের ঘটনা এখনকার না, এটা মামলার অনেক আগের। বিষয়টি আমি জেনেছি। তবে বিএনপির নাম ভাঙিয়ে যে এ ধরনের কাজ করবে, তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে, সোমবার (৪ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার গোবরচাঁপা হাট নামক স্থানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে দুটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া অবিস্ফোরিত ৬টি ককটেল উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) আওয়ামী লীগ ও দলটির সহযোগী সংগঠনের ৪০ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১২০ জনের নামে বদলগাছী থানায় বিস্ফোরক আইনে একটি মামলা হয়।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শামসুল আলম খান, উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম, মথুরাপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ রানা, মিঠাপুর ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ হোসেন, বদলগাছী সদর ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, কোলা ইউপি চেয়ারম্যান শাহিনুর ইসলাম।
মামলার প্রেক্ষিতে অভিযান চালিয়ে ইতোমধ্যে বদলগাছী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক বাবর আলীসহ তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সম্প্রতি হওয়া বিস্ফোরক মামলায় সঠিকভাবে তদন্ত করবেন বলে কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন থানার ওসি শাহ্জাহান আলী।
মন্তব্য করুন