কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সদ্য ঘোষিত পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন বঞ্চিতরা। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কমিটি বাতিল করা না হলে বড় আকারের কর্মসূচি ঘোষণারও হুঁশিয়ারি দেন তারা।
বুধবার (৬ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় কুষ্টিয়া শহরের পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। পরে বিক্ষোভ মিছিল শেষে শহরের মজমপুর রেলগেটে অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে সমাবেশ করেন তারা।
জেলা বিএনপির সাবেক কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামীম-উল হাসান অপুর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাবেক কমিটির যুগ্ম-সম্পাদক কাজল মাজমাদার, নূরুজ্জামান হাবলু মোল্লা, আব্দুর রাজ্জাক বাচ্চু, খোকসা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ আমজাদ আলী প্রমুখ।
এ সময় বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দলসহ বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বাচ্চু বলেন, সদ্য ঘোষিত জেলা বিএনপির কমিটিতে যোগ্যদের স্থান হয়নি। বিগত দিনে আন্দোলন সংগ্রামে যারা রাজপথে ছিলেন, হামলা মামলার শিকার হয়েছিলেন তাদের বাদ দিয়ে জাকির সরকার এবং কুতুব উদ্দিন আহমেদ মামা ভাগনে পকেট কমিটি করেছে। এটি বাতিল করা না হলে বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসূচির পাশাপাশি কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণার হুঁশিয়ারিও দেন তিনি।
আরেক সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক কাজল মাজমাদার বলেন, যোগ্য নেতাদের স্থান দেওয়া হয়নি কুষ্টিয়া বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিতে। যাদেরকে এখানে স্থান দেওয়া হয়েছে তারা কেউ পরীক্ষিত নন। এটি মামা ভাগনে কমিটি। অবৈধ এ কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করে শিগগিরই তা বাতিল করে ত্যাগীদের সমন্বয়ে নতুন কমিটি ঘোষণা করতে হবে। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
সমাবেশের সভাপতি জেলা বিএনপির সাবেক কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামীম-উল হাসান অপু বলেন, সদ্য ঘোষিত আহ্বায়ক কমিটিতে ত্যাগী নেতাদের স্থান দেওয়া হয়নি। টাকার বিনিময়ে বিক্রি করা হয়েছে কমিটি। তাই আগামীতে কুষ্টিয়ার মাটিতে কুতুব-জাকিরের নেতৃত্বে কোনো রাজনীতি হতে দেওয়া হবে না। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কমিটি বাতিল করা না হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘৩১ সদস্যের যে পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি দেওয়া হয়েছে তাতে আমাদের কোনো হাত নেই। বিএনপি একটি বড় সংগঠন। এখানে অনেক যোগ্য ব্যক্তি রয়েছেন। কেন্দ্র থেকে প্রত্যেকটি উপজেলা ও পৌর কমিটির ১১টি ইউনিটকে অন্তর্ভূক্ত করার নির্দেশনা রয়েছে। তাদেরকে রাখতে গিয়ে অনেক যোগ্য নেতা বাদ পড়েছেন, পড়তেই পারেন। তাই বলে রাজপথে মিছিল করে একটা বাজে পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে এটা কাঙ্খিত নয়। ওরা কেন্দ্রে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের দাবির কথা জানাতে পারত।’
তিনি বলেন, ‘যারা কমিটি বাতিলের মিছিল করেছে বিক্ষোভ করেছে তাদরে মধ্যে সদস্য ঘোষিত আহ্বায়ক কমিটির কয়েকজন রয়েছেন। বহিরাগতও রয়েছে, যারা বিগত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের ক্যাডার হিসেবে কাজ করেছে। আসলে তারা প্রকৃতপক্ষে কী চাইছেন সেটি আমরা বুঝতে পারছি না। ভিন্ন কোনো উদ্দেশ্য থাকতে পারে তাদের।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু এ আহ্বায়ক কমিটি ৩ মাসের। এ সময়ের পর যখন পূর্ণাঙ্গ কমিটি হবে তখন যোগ্য নেতাদের কাঙ্খিত জায়গায় দেওয়া হবে। এ বিষয়ে কেন্দ্রের পরিষ্কার নির্দেশনা রয়েছে।’
মন্তব্য করুন