সমুদ্রপথের সুবিধা কাজে লাগাতে মোংলা বন্দরসংলগ্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে ১৫টি এলপিজি কারখানা। এর মধ্যে দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রায় সব এলপিজি প্রতিষ্ঠানের কারখানা রয়েছে এখানে। ফলে বাংলাদেশে আমদানির মোট দুই তৃতীয়াংশ এলপিজি আমদানি হয় মোংলা সমুদ্রবন্দর দিয়ে। আর মোংলায় আসা মোট জাহাজের ৪০ ভাগ আসে এসব কারখানার এলপিজি বহন করে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মোংলা সমুদ্রবন্দরকে সচল রাখতে ও আরও গতিশীল করতে বড় ভূমিকা রয়েছে এলপিজি কারখানাগুলোর।
আরও পড়ুন : আবারও কমল এলপিজির দাম
মোংলা বন্দর সূত্র জানায়, সদ্য সমাপ্ত ২০২২-২৩ অর্থবছরে সব মিলিয়ে মোংলা বন্দরে জাহাজ ভিড়েছে ৮২৭টি। এর মধ্যে ৩৬৩টি জাহাজে এলপিজি আনা হয়েছে। এসব জাহাজে মোট ৯ লাখ ২৩ হাজার ৬৭ টন এলপিজি আমদানি হয়েছে। এর আগের অর্থবছরে ৩২৯টি জাহাজে ৯ লাখ ৩২ হাজার ৪০৬ টন এলপিজি আমদানি হয়েছিল। সাত বছর আগে পেট্রোম্যাক্স গ্যাস কোম্পানি প্রথমবারের মতো মোংলা বন্দর দিয়ে এলপিজি আমদানি করে।
সরেজমিনে দেখা যায়, মোংলা বন্দর জেটি থেকে কিছু দুরে সড়কের পাশে পশুর নদীর তীরে দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ওরিয়ন, নাভানা, পেট্রোম্যাক্স, বসুন্ধরা, ওমেরা, যমুনা, ডেলটা, দুবাই–বাংলা, লাফগ্যাস, সেনা, গ্রিন ,বেক্সিমকো ও বেঙ্গলসহ ১৫টি এলপিজি গ্যাস প্ল্যাটের অবস্থান। দেশের বড় শিল্প গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে যারা এলপিজি ব্যবসায় নেমেছে, তাদের প্রায় সবাই মোংলা এলাকায় এলপিজি কারখানা স্থাপন করেছে। গত সাত থেকে আট বছরে মোংলা বন্দর এলাকায় এ খাতে প্রচুর পরিমাণ বিনিয়োগ হয়েছে।
এলপিজি কারখানাগুলোর সূত্র থেকে জানা গেছে, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) ও সৌদি আরব থেকেই এলপিজি আমদানি করা হয়। মোংলা বন্দর দিয়ে এলপিজিবাহী ছোট জাহাজ আনা বেশ সহজ। এখানে প্রতিটি প্লান্টের নিজস্ব জেটি থাকায় সরাসরি প্ল্যান্টেই এলপিজি খালাস করা যায়। এ জন্যই ব্যবসায়ীরা মোংলা এলাকায় প্ল্যান্ট স্থাপনে বিনিয়োগ করেছেন। ফলে এই দুই কিলোমিটার সড়কের পাশে ডিমাকৃতির বিশাল বিশাল বয়লার চোখে পড়ে। কারখানার কর্মকর্তা ও স্থানীয় ব্যক্তিদের অনেকেই বলেন এ যেন গ্যাসের শিল্পনগরী।
বাগেরহাট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাটিজের সভাপতি মো. লিয়াকত হোসেন লিটন বলেন, মোংলা বন্দরে আগত জাহাজের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় এলপিজি কারখানারগুলোর জন্য। একইসঙ্গে এখানে এলপিজি কারখানা স্থাপন হওয়ায় অনেক কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে এবং এ অঞ্চলের মানুষের বেকারত্ব দূর হচ্ছে।
মন্তব্য করুন