বেশ কয়েক বছর ধরে নিজস্ব জমিতে মিশ্র ফলের চাষ করছেন কৃষক রায়হান মিয়া। উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় কৌতুহলবশত মিশ্র ফলের বাগানে লাগিয়েছিলেন মরণব্যাধী ক্যানসারের প্রতিষেধক হিসেবে পরিচিত ঔষধি গুণে ভরা ননী ফল ও করোসল গাছ। ফল আসার পর থেকে এলাকার ক্যানসার রোগীরা ছুটে আসছেন এই ননীফল ও করোসল পাতা নিতে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মেহারী ইউনিয়নের যমুনা গ্রামের কৃষক রায়হান মিয়া নিজ বাড়ির পাশে আড়াই বিঘা জমিতে করেছেন একটি মিশ্র ফলের বাগান। বারো মাসি আম, আমড়া, মাল্টা, সফেদাসহ অর্ধশত জাতের ফল গাছ ও পাঁচ জাতের ঔষধি গাছ রয়েছে তার বাগানে।
প্রায় দেড় বছর আগে ইউনিয়ন কৃষি উপসহকারী জাকির হোসেনের পরামর্শে ও উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় তার বাগানে লাগিয়েছিলেন মরণব্যাধী ক্যানসারসহ অনেক রোগের প্রতিষেধক হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিত ননী ফল ও করোসল গাছ। কয়েকমাস ধরে ফল আসছে ননী ফল গাছে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে নিজ উপজেলা ও আশপাশের উপজেলা থেকে রোগীর স্বজনরা নিতে আসছে ননী ফল ও করোসল পাতা।
তার নিজ গ্রামের ৭ জন ক্যানসার রোগীর ওপর চলছে এর ব্যবহার। উপকৃত হচ্ছেন তারা। ডায়াবেটিস ও গ্যাস্ট্রিক রোগীরাও নিতে আসেন এই ফল। উপজেলা কৃষি অফিসের সহায়তায় আরও দুই বিঘা জমিতে ননী ফল ও করোসল গাছসহ বেশকিছু ঔষধি গাছ লাগাবেন বলে জানান।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইউনানি মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. ইমন হোসেন বলেন, ননী ফল ও করোসল পাতা দুটোই ঔষধি গুণে ভরা। এই ফল ও পাতা নিয়মিত খেতে পারলে ক্যানসারের কোষ তৈরিতে বাধা সৃষ্টি করে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রচুর পরিমাণে বেড়ে যায়।
উপজেলা কৃষিকর্মকতা কৃষিবিদ হাজেরা বেগম বলেন, রায়হান মিয়া একজন ভালো উদ্যোক্তা। তার চাষকৃত ননী ফল গাছে এবার ফল ধরেছে। এই ফল বিভিন্ন রোগের ওষুধ হিসেবে কাজ করে। এই ফল খাওয়ার পদ্ধতি খুব সহজ। মানুষের মধ্যে সচেতনতা বেড়েছে। তারা এগুলো সংগ্রহ করে নিজেরাই জুস তৈরি করে খাচ্ছে। গুণাগুণের দিক থেকে ননী ফল ক্যানসার প্রতিরোধক। পুরোনো বাতের ব্যথা নিরাময়ে এই গাছের ফল ও পাতা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এই দুটো ভেষজই স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এটি বাণিজ্যিকভাবে কেউ চাষ করতে চাইলে উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা করা হবে।
মন্তব্য করুন