সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য আলতাব হোসেন মুকুল ও তার বৃদ্ধ মা রিজিয়া খাতুনকে হত্যার দায়ে মো. হাফিজুল ইসলাম (৪০) নামে এক ব্যক্তিকে ফাঁসিকে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় আরও ৭ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে সব আসামিকে এক লাখ টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) দুপুরের দিকে সিরাজগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক মোহাম্মদ এরফান উল্লাহ এ দণ্ডাদেশ দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মো. হাফিজুল ইসলাম উল্লাপাড়া উপজেলার পূর্ব মহেশপুর গ্রামের মো. শাহজাহান প্রামানিকের ছেলে।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন মহেশপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেন ওরফে দুলাল প্রাং (৫৫), মো. বাচ্চু মিয়া (৪৩), মো. দুলাল সরকার (৬০), মাসুদ উল্লাহ ওরফে রতন (৪০) রহমত উল্লাহ পান্না (৪৩), মো. রফিকুল ইসলাম (৬২) ও মো. বদিউজ্জামান (৬০)। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
ওই আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট জাহিদা সুলতানা বিথি এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, আধিপত্য নিয়ে পূর্ব বিরোধের জের ধরে ২০১৯ সালের ২৬ জুন রাত ৯টার দিকে সাবেক সেনা সদস্য আলতাব হোসেন মুকুল ও তার বৃদ্ধ মা রিজিয়া খাতুনকে কুপিয়ে ও পায়ের রগ কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। পরদিন সকালে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ২৭ জুন নিহত আলতাব হোসেন মুকুলেল স্ত্রী মোসা. শামীম আরা অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্তকালে পুলিশ হাফিজুল ও আবুল কালাম আজাদ নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করে। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ১৩ অক্টোবর আদালতে চার্জশিট দেয় পুলিশ। প্রসিকিউশন ২০ জন সাক্ষী আদালতে উপস্থাপন করেন। এদিকে বিচার চলাকালে আসামি আবুল কালাম আজাদের মৃত্যু হওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। দীর্ঘ শুনানি শেষে মঙ্গলবার বিচারক এ আদেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট মো. আবু বককার সিদ্দিক ও সহকারী পিপি অ্যাডভোকেট জাহিদা সুলতানা বিথি। আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট আবুল কাশেম, অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট এস এম দেলোয়ার হোসেন মন্টু, অ্যাডভোকেট মো. আসিফ আজাদ (রাতুল) ও অ্যাডভোকেট সেরাজুল ইসলাম আকন্দ।
মন্তব্য করুন