সিলেটের চা শ্রমিকদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলমান অসন্তোষ এবার কঠোর আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। ন্যাশনাল টি কোম্পানির অন্তর্গত বিভিন্ন চা বাগানের কয়েক হাজার শ্রমিক টানা ১৫ দিন ধরে কর্মবিরতি পালন করছেন।
সোমবার (৪ নভেম্বর) সিলেটের লাক্কাতুরা চা বাগানের সামনে ন্যাশনাল টি কোম্পানির অন্তর্ভুক্ত লাক্কাতুরা, কেওয়াছড়া এবং দলদলি চা বাগানের শত শত শ্রমিক মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন।
শ্রমিকরা দাবি করছেন, তাদের ৭ সপ্তাহের বকেয়া মজুরি এবং ১৩ মাসের প্রভিডেন্ট ফান্ডের (পিএফ) চাঁদা তহবিলে জমা দেওয়া হয়নি। মালিকপক্ষের প্রতিশ্রুতি থাকলেও এসব বকেয়া আদায়ের কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি।
শ্রমিকরা জানান, তারা বারবার মালিকপক্ষের কাছে মজুরি পরিশোধের দাবি জানালেও বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে তা দেওয়া হচ্ছে না। চা বাগানের ম্যানেজার ও অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিয়মিত বেতন পেলেও শ্রমিকদের এই প্রাপ্য মজুরির ক্ষেত্রে অবহেলা করা হচ্ছে।
চা শ্রমিকদের এই আন্দোলনের প্রভাবে ন্যাশনাল টি কোম্পানির মালিকানাধীন ১২টি চা কারখানা বন্ধ রয়েছে। কর্মবিরতির কারণে এসব কারখানার উৎপাদন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে এবং চায়ের কাঁচামাল পাতা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
আশঙ্কা করা হচ্ছে, এভাবে চলতে থাকলে চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হবে প্রতিষ্ঠানগুলো।
এই বিষয়ে ন্যাশনাল টি কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার এমদাদুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।
প্রসঙ্গত, সিলেট বিভাগের তিন জেলায় দেশের ১৩৬টি চা বাগান অবস্থিত। ১৮৫৪ সালে সিলেটের মালনীছড়া চা বাগান থেকে চা উৎপাদন শুরু হলেও আজও অনেক শ্রমিক তাদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত রয়ে গেছেন।
মন্তব্য করুন