জামালপুরের বকশীগঞ্জে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর গাছের সঙ্গে বেঁধে লাল থেরাপি দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আজিজুল হক। তিনি প্রকাশ্যে মাইকযোগে উপজেলার বেশ কয়েকটি সভা সমাবেশে এ ঘোষণা দেন।
জানা যায়, গত ২৮ অক্টোবর রজব আলী নামে এক রিকশাচালক অসুস্থ হয়ে বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় রোগীর স্বজনরা কতর্ব্যরত ডাক্তার আসামা লাবনীর দায়িত্ব পালনে অবহেলার অভিযোগ তুলে তার সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে রোগীর লোকজন ডাক্তার আসমা লাবনীর ওপর হামলা করেন। এ ঘটনায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকরা পেশাগত দায়িত্ব পালনের অংশ হিসেবে ঘটনার ছবি ও ভিডিও ধারণ করেন। এ ঘটনায় পরদিন ২৯ অক্টোবর মৃত রজব আলীর পরিবারের সদস্য হাসি বেগম (৩৫), শেফালি বেগম (৩০), খোকন মিয়া (৩৮), জহুরুল হককে (৪২) আসামি করে বকশীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। একই সঙ্গে ঘটনার ছবি ও ভিডিও ধারণ করায় একই মামলায় দৈনিক বসুন্ধরার সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম (৩৬), মুভি বাংলার সাংবাদিক এ কেএম নূর আলম নয়ন (৩৫) ও দৈনিক বাংলাদেশ সমাচারের সাংবাদিক মারুফ হাসানকেও আসামি করা হয়।
মামলা দায়েরের পর থেকেই বেপরোয়া হয়ে ওঠেন বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আজিজুল হক। ঘটনার ভিডিও ও ছবি ধারণ করায় তিনি সরকারি কর্মচারী হয়েও চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ রেখে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে একাধিক দিন বিক্ষোভ মিছিল করেন। আজিজুল হক জনসন্মুখে প্রকাশ্যে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে নানা আপত্তিকর বক্তব্য দেন এবং তার অধীনস্থ কর্মচারীদেরও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিছিলে যেতে বাধ্য করেন।
আজিজুল হক একাধারে তিনদিন সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিছিল বের করে বকশীগঞ্জ পৌর শহর, উপজেলা ক্যাম্পাস ও বাস টার্মিনালসহ বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে তিনি সাংবাদিকদের গাছের সঙ্গে বেঁধে লাল থেরাপি দেওয়ার ঘোষণা দেন। বক্তব্যে তিনি সাংবাদিকদের বকশীগঞ্জ থেকে বিতাড়িত করার ঘোষণা দেন।
এ ঘটনায় বকশীগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল লতিফ লায়ন বলেন, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও বিভিন্নস্থানে প্রকাশ্যে মাইকযোগে যেসব মানাহানিকর বক্তব্য দিয়েছেন তার নিন্দা জানাই। তিনি যা করছেন অতিরঞ্জিত করছেন।
এ ব্যাপারে জামালপুর জেলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি অ্যাডভোকেট ইউসূফ আলী জানান, একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়ে ঢালাওভাবে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক দলের নেতার আদলে এভাবে বক্তব্য দিতে পারেন না। তার বক্তব্যে জামালপুর জেলার সাংবাদিক সমাজ বিব্রত।
মন্তব্য করুন