অবশেষে কারামুক্ত হয়েছেন রাজশাহীর হাফেজ আব্দুল মুকিত। ২০১৭ সালের ২৭ মে ফেসবুকে আওয়ামী লীগ নিয়ে একটি কৌতুক পোস্ট দেওয়ার পর মুকিতের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। পরে আদালত তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন। তবে ৫ আগস্ট সরকারের পতনের পরও মুক্তি পেতে নানা জটিলতায় পড়েন তিনি।
তার আইনজীবী হাসানুল বান্না সোহাগ এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, রোববার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান হাফেজ মুকিত।
এর আগে গত ১৩ অক্টোবর ‘আ.লীগকে নিয়ে ‘কৌতুক’ করে তিন বছর ধরে জেলে’ শিরোনামে কালবেলায় একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সংবাদটি ওই সময় রাজশাহীসহ সারা দেশে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল।
মুকিত পবা উপজেলার হরিপুর এলাকার রিয়াজুল ইসলামের ছেলে। তার পরিবারে ছয় ভাইবোনের মধ্যে তিনি একমাত্র ছেলে। বড় বোন রাদিয়া বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা করছেন, ছোট বোন রাকিবা যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং সবার ছোট সুমাইয়া রাজশাহী সরকারি মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে পড়ছে।
মুকিত ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘আইয়াম শব্দ থেকে এসেছে আওয়ামী, অর্থাৎ অন্ধকার। আর ‘লীগ’ অর্থ দল। অর্থাৎ আওয়ামী লীগ অর্থ অন্ধকারের দল।’ এই স্ট্যাটাসের জের ধরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সাইদুর রহমান বাদল পবা থানায় আইসিটি আইনে মামলা করেন। ২০২২ সালে সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুকিতকে ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকার অর্থদণ্ড দেন।
কারাগারে থেকেই মুকিত ফাজিল (স্নাতক) ও কামিল (স্নাতকোত্তর) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। সর্বশেষ তার কামিল পরীক্ষার ফলাফল ৩ অক্টোবর প্রকাশ হয়, যেখানে তিনি জিপিএ-৩.৫০ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।
মুকিতের মুক্তি প্রসঙ্গে আইনজীবী হাসানুল বান্না সোহাগ বলেন, ‘মুক্তি পেয়ে আমরা সন্তুষ্ট। তবে ফ্যাসিবাদ দূর হওয়ার পরও এত সময় লাগায় আমরা ক্ষুব্ধ। আইনি জটিলতার কারণে বিলম্ব হলেও অবশেষে ন্যায়বিচার পেয়ে মুক্তি পেয়েছেন।’
মন্তব্য করুন