খুলনার কয়রায় সিদ্দীকিয়া ফাজিলা (ডিগ্রি) মাদ্রাসার দুই শিক্ষক-শিক্ষিকার অনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে এলাকাব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে, মাদ্রাসার শিক্ষকের সঙ্গে শিক্ষিকার বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক নিয়েও ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কয়রা সিদ্দীকিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার বাংলা শিক্ষক সাইফুল ইসলামের সঙ্গে ওই মাদ্রাসার কৃষি শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষিকার সঙ্গে দীর্ঘদিন পরকীয়ার সম্পর্ক ছিল। ইতোপূর্বে তাদের পরকীয়ার সম্পর্ক জানাজানি হলে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ বসে বিষয়টির সমাধান করেন। পরে তাদের বারবার সতর্ক করার পরেও তারা তা ভ্রূক্ষেপ করেনি।
শনিবার (২ নভেম্বর) রাত ১০টার দিকে কয়রার মদিনাবাদ গ্রাম বাড়ির পেছনের বাগান থেকে ওই শিক্ষক-শিক্ষিকাকে অনৈতিক অবস্থায় আটক করে স্থানীয় কিছু যুবক। পরে তাদের কয়রা থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
ইতোমধ্যে অভিযুক্ত ওই শিক্ষক-শিক্ষিকার অনৈতিক সম্পর্কের সময় আটকের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
৪ মিনিট ৪২ সেকেন্ডের ভিডিওতে স্থানীয় যুবকেরা শিক্ষিকার কাছে তাদের সম্পর্কের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাইফুল আমার চাচাতো ভাই। আমরা খারাপ কিছু করিনি। সে আজ আমাদের বাড়িতে থাকবে বলে এসেছে।
জানা যায় শিক্ষক সাইফুল ইসলামের বাড়ি কুষ্টিয়া শহরে দৌলতপুর থানায়। তিনি এনটিআরসি নিয়োগে গত ২০২২ সালে কয়রা সিদ্দীকিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় যোগদান করেন। সেই থেকে কয়রা সদরের একটা ভাড়া বাসায় থাকেন তিনি।
স্থানীয় ইলিয়াস হোসেন বলেন, শনিবার রাতে কয়রা সিদ্দীকিয়া মাদ্রাসার ২ শিক্ষককে তাদের (শিউলি আক্তার) বাড়ির বাগান থেকে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সময় রাত আনুমানিক ১০টার দিকে আমরা আটক করি। তাদের পরিচয় জানতে চাইলে বলেন আমার চাচাতো ভাই আমাদের বাড়িতে থাকবে। পরে লোকজন জড়ো হতে থাকে। তখন আমরা কয়রা থানা পুলিশের কাছে তুলে দেই। তবে এর আগেও ওই শিক্ষক সাইফুল ইসলামকে একাধিক বার শিউলির বাড়িতে যাতায়াত করতে দেখা যায়।
৪নং কয়রা গ্রামের বাসিন্দা সমাজসেবক শেখ নুরুল হুদা বলেন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষিকার অনৈতিক কর্মকাণ্ড এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এলাকাবাসী তাদের আচরণে ক্ষুব্ধ। আমরা তাদের বহিষ্কার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
কয়রা সিদ্দীকিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মানছুর আলী কালবেলাকে বলেন, আমি শুক্রবার ও শনিবার ছুটিতে বাড়িতে ছিলাম। তবে ঘটনা শুনেছি। এখন জরুরি মিটিং করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
কয়রা থানার ওসি (তদন্ত) মো. শাহ আলম কালবেলাকে বলেন, তাদের প্যানাল কোর্টে ২৯০ ধারায় কয়রা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রেরণ করা হয়।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ কালবেলাকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, কয়রা সিদ্দীকিয়া ফাজিল মাদ্রাসার দুই শিক্ষকের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ঘটনার কথা শুনেছি। এটা দুঃখজনক ব্যাপার। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন