নওগাঁর মহাদেবপুরে আত্রাই নদের বালুমহাল নিয়ে দুপক্ষের দ্বন্দ্বে বিপাকে পড়েছেন পাঁচ গ্রামের অন্তত ১০ হাজার কৃষক। দ্বন্দ্বের কারণে উৎপাদিত কৃষিপণ্য আনা-নেওয়া ও ফসলের পরিচর্যা করতে না পারায় লোকসানের আশঙ্কাও করছেন তারা।
অভিযোগ উঠেছে, একই এলাকার দুপক্ষ দ্বন্দ্বে জড়িয়ে সরকারি রাস্তার কালভার্ট, ব্রিজ ভাঙচুর ও একাধিক স্থানে খনন করে রাস্তা নষ্ট করেছে। এতে ফসলের মাঠে যেতে না পারছেন না এলাকার কৃষকরা।
স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার আত্রাই নদের বালুমহাল ইজারা নেন মালেকা পারভীন। তার কাছ থেকে হাতুড় ইউনিয়নের দেওয়ানপুর গ্রামের সুলতানপুর মৌজার বালমহাল সাব-ইজারা নেন আবুল কালাম আজাদ বাবু ও আফজাল হোসেন এবং নূরপুর মৌজার বালমহাল সাব-ইজারা নেন জলিল হোসেন ও জাহাঙ্গীর আলম।
তারা আরও জানান, গত ৫ আগস্টের পর থেকে এই দুপক্ষের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে রূপ নেয়। আবুল কালাম আজাদ বাবু বালু উত্তোলনে বাধা দেন জলিল ও জাহাঙ্গীরকে। লক্ষ্যে সরকারি রাস্তার কালভার্ট, ব্রিজ ভাঙচুর ও একাধিক স্থানে খনন করে রাস্তা নষ্ট করেছে।
ফলে তাদের দ্বন্দ্বে ভোগান্তিতে পড়েছে ৫টি গ্রামের অন্তত ১০ হাজার কৃষক। ফসলের মাঠে যেতে না পেরে ফসলের পরিচর্যা ও কৃষি পণ্য আনা-নেওয়ায় করতে পারছেন না তারাদ
দেওয়ানপুর গ্রামের কৃষক আলম হোনের জানান, রাস্তা নষ্ট হওয়ায় তার উৎপাদিত কলা মাঠ থেকে আনতে পারছেন না। ফলে তার কলা মাঠেই পেকে যাচ্ছে। দ্রুত এ সমস্যার সমাধান না হলে সব কলা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন তিনি।
জামেলা বেগম ও হাফিজুর ইসলাম জানান, রাস্তার কালভার্ট ভেঙে ফেলায় গবাদিপশু মাঠে নিয়ে যেতে পারছেন না তারা। ফসলের পরিচর্যার জন্য মাঠেও যেতে পারছেন না। এতে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার চিন্তায় কপালে ভাঁজ পড়েছে তাদের।
অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে বালুমহালের ইজারাদার জলিল হোসেন ও জাহাঙ্গীর আলম কালবেলাকে বলেন, দুপক্ষের বালু উত্তোলনের স্থান পাশাপাশি হওয়ায় দীর্ঘদিন থেকে এ দ্বন্দ্ব চলে আসছে। এর জেরে গত বৃস্পতিবার রাতে আবুল কালাম আজাদ বাবু ও তার বাহিনী আমাদের বালু উত্তোলনের মেশিন ভাঙচুর, লুটপাট ও রাস্তা নষ্ট করে দিয়েছে। এতে আমরা লোকসানে পড়েছি। এর দ্রুত সমাধানসহ দোষীদের বিচার চাই।
তবে কৃষকদের ভোগান্তির কথা স্বীকার করে জলিল হোসেন বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বালু উত্তোলন করছিলাম। আবুল কালাম আজাদ বাবু ও তার লোকজন ভাঙচুর ও রাস্তা নষ্ট করায় কৃষকদের দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আবুল কালাম আজাদ বাবু কালবেলাকে বলেন, তারা নিজেরাই তাদের ক্ষতি করে আমার ওপর দোষ চাপাচ্ছেন।
মাহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুজ্জামান কালবেলাকে বলেন, এ বিষয়ে আমার জানা ছিল না। আজ আমাকে একজন জানিয়েছেন। এসি ল্যান্ড কর্মস্থলে নেই। তিনি এলে বিষয়টির খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন