মানুষের দোরগোড়ায় চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দিতে দুই যুগ আগে সারা দেশের মতো ভান্ডারিয়া উপজেলায় মুঠোফোনে জরুরি স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার কার্যক্রম চালু হয়। কিন্তু এ সেবা সম্পর্কে মানুষের ধারণা না থাকায় তা কোনো কাজে আসছে না। কোনো রকম প্রচার-প্রচারণা না থাকায় উপজেলা সদর তো বটেই, দুর্গম চরাঞ্চলসহ প্রত্যন্ত গ্রামীণ জনসাধারণের কাছে এ সেবা কার্যক্রমটি এখনো অজানাই রয়ে গেছে।
জানা গেছে, ২০০৯ সালের মে মাস থেকে সরকার দেশের ৪১৮টি জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মুঠোফোনে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম চালু করে। জরুরি চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে প্রতিটি হাসপাতাল ও কমপ্লেক্সে একটি করে মুঠোফোন দেওয়া হয়। নিয়মানুযায়ী একজন মেডিকেল কর্মকর্তার রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা ওই মুঠোফোনের মাধ্যমে জনগণকে জরুরি চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দেওয়ার কথা। ফোন নম্বরটি জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রদর্শন ও প্রচারের সরকারি নির্দেশনাও রয়েছে।
জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন মাধ্যমে জনগণকে নম্বরটি জানাতে বলা হয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রচার বা প্রদর্শনে উদ্যোগী না হওয়ায় মুঠোফোনে স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম কার্যকর হয়নি। ফোনটি এখন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা কর্মচারীদের অভ্যন্তরীণ যোগযোগের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ভান্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যে মুঠোফোনটি দেওয়া হয়েছে সেটি নিয়মনুযায়ী ফোন ২৪ ঘণ্টা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে থাকার কথা এবং সেখান থেকেই চিকিৎসকের মাধ্যমে চিকিৎসা ও পরামর্শ দেওয়ার কথা। স্থানীয় সঞ্জীব কুমার দাস বলেন, আমি শুনেছি ফোনের মাধ্যমে সেবা প্রদান করা হয়, কিন্তু কখনোই বাস্তবে তার কোনো প্রমাণ পাইনি। হাসপাতালে এর কোনো কার্যক্রম আছে বলে বোঝা যায় না। শুধু আমি না, অনেকেরই এ ধরনের সেবা সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই।
ভান্ডারিয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম সারওয়ার জমাদ্দার বলেন, আমি বর্তমানে পৌরসভার নাগরিক হয়েও মোবাইল ফোনের এই চিকিৎসা সেবা সম্পর্কে জানি না। সেখানে আমার পৌরসভার সাধারণ মানুষ জানবে কী করে? এই সেবা সম্পর্কে কোনো রকম প্রচার না থাকার কারণেই এমন অবস্থা হয়েছে।
এ ব্যাপারে ভান্ডারিয়া উপজেলার বাসিন্দা মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, ফোনে চিকিৎসা দেওয়ার কথা শুনেছি। তবে ভান্ডারিয়া হাসপাতালে সেবার জন্য যে ফোন দিয়েছে তা আমাদের জানা নেই।
এ বিষয়ে ভান্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা. বনালী দেব নাথ কালবেলাকে বলেন, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য আমরা সর্বদা প্রস্তুত থাকলেও চিকিৎসাসেবা নেওয়ার জন্য কাউকে খুব একটা ফোন করতে দেখি না। তবে জরুরি বিভাগে ফোন করলে সেবা পাওয়া যাবে বলে তিনি জানান।
মন্তব্য করুন