বরিশালের গৌরনদী থেকে কাল নাগিনী সাপের একটি বাচ্চা উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (১ নভেম্বর) সকালে পৌর এলাকার গেরাকুল গ্রাম থেকে সাপের বাচ্চাটি উদ্ধার করা হয়।
ওই গ্রামের যুবক সরাফত হোসেন বাবু জানান, শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে দুর্লভ প্রজাতির একটি সাপের বাচ্চা দেখতে পেয়ে কৌশলে সেটিকে তারা বোতলজাত করেন। পরে প্রাণীটিকে স্থানীয় বন বিভাগের কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বন কর্মকর্তা আবু সুফিয়ান সাকিব কালবেলাকে জানান, এ অঞ্চলে আগে কখনো কালনাগিনী দেখা যায়নি। সাপটি সম্পর্কে তারা তেমন কিছু জানেনও না। ফলে স্থানীয়দের মধ্যে কিছুটা আতঙ্ক রয়েছে। সাপের বাচ্চাটি সংশ্লিষ্ট রেসকিউটিমের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এদিকে কাল নাগিনী সম্পর্কে বাংলাদেশ বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা জোহরা মিলা জানান, দেশে পাওয়া দৃষ্টিনন্দন সাপগুলোর মধ্যে কাল নাগিনী (Ornate Flying Snake) অন্যতম। অঞ্চলভেদে সাপটিকে উড়াল সাপ, সুন্দরী সাপ, কাল সাপ ইত্যাদি নামেও ডাকা হয়। ইংরেজি নামের সঙ্গেও ‘ফ্লাইং স্নেক’ রয়েছে, তবে সাপটি মোটেও উড়তে পারে না। এটি গাছের উঁচু ডাল থেকে নিচু ডালে লাফিয়ে নামে। কাল নাগিনী দিবাচর ও শান্ত স্বভাবের সাপ। খুব বেশি বিরক্ত না হলে কামড়ায়ও না। এরা গিরগিটি, বাঁদুড়, ইঁদুর, ছোট পাখির ডিম ও কীটপতঙ্গ খায়। এরা সাধারণত পোকামাকড়, টিকটিকি, গিরগিটি, ব্যাঙ ও ছোট পাখি ইত্যাদি খায়। সাধারণত মার্চ থেকে জুলাই পর্যন্ত এদের প্রজনন মৌসুম। সাপটি একবারে ৬-১২ টি ডিম পাড়ে যা থেকে দুইমাস পর বাচ্চা ফোটে।
তিনি বলেন, কাল নাগিনী নির্বিষ সাপ। অথচ নাটক-সিনেমায় কাল নাগিনীকে ভয়ংকর বিষধর সাপ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। ফলে মানুষ সাপটি দেখামাত্রই মেরে ফেলে। এতে সুন্দর প্রাণীটির অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে।
মন্তব্য করুন