শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে বিদ্যুতের ফাঁদ পেতে আবারও হাতি হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় হাতি হত্যায় জড়িত একজনকে আটকের পাশাপাশি হত্যার কাজে ব্যবহৃত জেনারেটর জব্দ করেছে বন বিভাগ।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার বাতকুচি টিলাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরিপেক্ষিতে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে ‘ফিল্ড রিচার্স ইন্সটিটিউট অব বাংলাদেশ ওয়াইল্ড এলিফ্যান্ট’।
স্থানীয়রা জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে বাতকুচি এলাকায় পাহাড় থেকে ধান ক্ষেতে নেমে আসে হাতির দল একটি দল। সেখানে আগে থেকেই জেনারেটর দিয়ে বৈদ্যুতিক ফাঁদ পেতে রেখেছিলেন কয়েকজন কৃষক। এ সময় একটি হাতি ওই বিদ্যুতের ফাঁদে জড়িয়ে যায়। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার পর হাতিটি বাঁচতে গগণবিদারী চিৎকার করতে থাকে। তখন হাতির দলটিও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়া হাতিটিকে ঘিরে রাখে এবং তারাও চিৎকার করতে থাকে। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে বন বিভাগের লোকজন ঘটনাস্থল থেকে হাতি হত্যায় জড়িত শহিদুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে।
এ বিষয়ে রিচার্স অ্যান্ড কনজারভেশন অব এলিফ্যান্ট বাংলাদেশের সভাপতি ও স্তন্যপায়ী বিশেষজ্ঞ আসাদুজ্জামান পৃথিল বলেন, হাতি তার নিজস্ব ভূমিতেই বিচরণ করছিল। হাতি হত্যার দায়ে অনুপ্রবেশকারী মানুষদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি এবং বন থেকে এসব অনুপ্রবেশকারী মানুষদের দ্রুত উচ্ছেদের দাবি করছি
জেলা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও জীববৈচিত্র্য কর্মকর্তা সুমন কুমার সরকার জনান, এ নিয়ে চলতি বছর শেরপুরে দুটি মৃত হাতি উদ্ধার করা হলো।
এদিকে শুক্রবার (১ নভেম্বর) সকালে শেরপুর সহকারী বন সংরক্ষক সাদেকুল ইসলাম খান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কালবেলাকে বলেন, মৃত হাতিটির ময়না তদন্ত শেষে মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে। তবে জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুতের তারেই এ হাতিটির মৃত্যু ঘটেছে এটা প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত। আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি।
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনার সঙ্গে ১০ থেকে ১২ জন জড়িত। তাদের খোঁজা হচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, শেরপুরে প্রায়ই হাতি হত্যার ঘটনা ঘটে। গত ৬ মে ঝিনাইগাতীর বাকাকুড়া গ্রামে একটি হাতি হত্যা করা হয় বলে জানা গেছে। এ ছাড়া শেরপুরে ২০২২ সালে দুটি ও ২০২১ সালে তিনটি হাতি হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ আছে।
মন্তব্য করুন