মসজিদের জমিতে দলীয় ক্লাবঘর নির্মাণ করার অভিযোগে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মো. রেজাউল হাওলাদারকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক কাজী আব্দুল্লাহ আল মামুন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এ সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী ও সম্পাদক রাজিব আহসান অনুমোদন করেছেন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল শরীয়তপুর জেলা শাখার সহসভাপতি মো. রেজাউল হাওলাদারকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সবপ্রকার পদ থেকে বহিষ্কার করা হলো এবং দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কোনো প্রকার যোগাযোগ না রাখার নির্দেশও দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি এসএম জিলানী ও সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান ইতোমধ্যে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের শরীয়তপুর জেলা সভাপতি আমিনুর রহমান আমান।
তিনি জানান, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল শরীয়তপুর জেলা সহসভাপতি রেজাউল হাওলাদারকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি থেকে এমন একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি গত রাতে আমার হাতে এসে পৌঁছায়। তবে আমি শরীয়তপুরের স্বেচ্ছাসেবক দলের অন্যান্য যেসব নেতাকর্মী যারা আছেন তাদের বলতে চাই। স্বেচ্ছাসেবক দলে কোনো অপরাধীর ছাড় নেই। তিনি যেই হোন না কেন, যিনি কোনো অপরাধের মাধ্যমে দলকে বিতর্কিত করবেন তাকে দলীয় শাস্তি পেতেই হবে। কারো ব্যক্তিগত কোনো অপরাধের দায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল নেবে না। তাই ভবিষ্যতে বিএনপির রাজনীতি ও স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজনীতি করার জন্য সবাইকে ভেবেচিন্তে রাজনীতি করতে হবে। যারা এসব মেনে রাজনীতি করতে পারবেন না, তাদের জানাতে চাই, আপনারা আগে থেকেই বিএনপির রাজনীতির ছেড়ে দেন।
বহিষ্কার ও ক্লাব নির্মাণে বিষয় জানতে চাইলে, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহসভাপতি রেজাউল হাওলাদার বলেন, বহিষ্কারাদেশের কপি এখন পর্যন্ত আমি পাইনি। আর আমার বিরুদ্ধে মসজিদের জায়গা দখল করে যে অভিযোগ আনা হয়েছে। সেই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। এইখানে মসজিদের বেশকিছু দোকান রয়েছে ভাড়া দেওয়া। আমি ঠিক তেমনিভাবে একটি পুরোনো দোকান সংস্কার করে একটি ঘর নির্মাণ করেছিলাম। আমি মসজিদের কয়েকজন উপদেষ্টার কাছে, ওই ঘর নির্মাণের অনুমতিও নিয়েছি। এই বিষয়ে মসজিদ কমিটির সবাই জানে।
মসজিদ কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট ফিরোজ আহমেদ বলেন, নিজেরাই দায়িত্ব নিয়ে ক্লাবটি উঠিয়েছেন। অনুমতির বিষয়ে আমার কোনো কিছু জানা নেই। আর ভাড়া দেওয়ার বিষয়টি আমাদের কমিটিকে জানায়নি কেউ।
উল্লেখ্য, নড়িয়া উপজেলার ঘড়িষার ইউনিয়নের ঘড়িষার বাজারের শত বছরের পুরোনো ঘড়িষার জামে মসজিদ। এই মসজিদের জমিতে ভাড়া দেওয়া রয়েছে বেশকিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট, যা থেকে প্রতি মাসে মসজিদের আয় হয় কয়েক লাখ টাকা। সেই টাকা দিয়ে মসজিদের বিভিন্ন উন্নয়নকাজ করা হয় থাকে। কয়েকদিন আগে অক্টোবরে মসজিদের একটি পরিত্যক্ত দোকান ঘর ভেঙে রেজাউল করিমের নেতৃত্বে ইউনিয়ন বিএনপির ক্লাব তৈরি করে জায়গাটি দখলে নেয় স্থানীয় কিছু নেতাকর্মীরা। যদিও মসজিদ কমিটি থেকে ক্লাব তৈরির জন্য কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি বলে দাবি করেছেন মসজিদ কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট ফিরোজ আহমেদ।
মন্তব্য করুন