ঠাকুরগাঁওয়ের দুটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব দখল করে প্রকল্পের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বানানোর অভিযোগ উঠেছে। এতে করে প্রতিষ্ঠান দুটির শিক্ষার্থীরা ল্যাবে কোনো ধরনের ক্লাস করতে পারছে না। শিক্ষার্থীদের ল্যাবে হাতে কলমে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জেলার পৌরশহরের সি এম আইয়ুম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও ইসলাম নগর উচ্চ বিদ্যালয়ের আইসিটি ল্যাবে প্রশিক্ষণ চলছে। প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের আওতায় হার পাওয়ার প্রকল্পের প্রশিক্ষণার্থীরা। চলতি বছরের শুরু থেকে সকাল ও বিকেল প্রশিক্ষণ চলছে ল্যাবগুলোতে। এতে ল্যাবে হাতে-কলম শিখতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা। যদিও প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী ভেণ্ডর প্রতিষ্ঠান প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসহ যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
সি এম আইয়ুব বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাহসীন মীম কালবেলাকে বলেন, প্রকল্পের প্রশিক্ষণ আমাদের ল্যাবগুলোতে চলছে। আমরা এ বছরে কোনো কিছু শিখতে পারিনি। আমাদের স্যারদের অনেকবার বলেছি কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নেন নি। আমাদের স্কুল জীবন শেষ হয়ে যাচ্ছে। অথচ আমরা যে এ বছরে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির কিছু শিখতে পারলাম না। এর দায়ভার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে।
সিএম আইয়ুব বালিকা উচ্চ বিদয়ালয়ের আইসিটি শিক্ষক হুমায়ুন কবির কালবেলাকে বলেন, এ বছরে আমরা ল্যাবে পাঠদান করাতে পারিনি। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়টি হাতে কলমে শেখার বিষয়। ল্যাবগুলোতে ক্লাস না হওয়ার কারণে শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছেন। এটি দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান করা উচিত।
সি এম আইয়ুব বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দ্বীপেন্দ্র নাথ ঝা কালবেলাকে বলেন, জেলা প্রশাসন থেকে আমাদের অবহিত করার পরে আমরা আমাদের ল্যাব প্রশিক্ষণের জন্য দিয়েছি। উনারা সকাল থেকে দুপুর আর দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত দুটি শিফটে ক্লাস নেন। এতে করে আমাদের শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে পারেন না। আমরা বিষয়টি তাদেরকে জানিয়েছি।
বিষয়গুলো সম্পর্কে জানার জন্য কয়েকবার ভেণ্ডর প্রতিষ্ঠান বেবিলনের সঙ্গে মুঠোফোন ও সরাসরি যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তা সম্ভব হয়নি।
জেলার সদর উপজেলা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান কালবেলাকে বলেন, আমরা শুধু প্রশিক্ষণ তদারকি করে থাকি। বাকি সব কাজ ভেন্ডর প্রতিষ্ঠান গুলো করে থাকেন। তবে শিক্ষার্থীরা যাতে ল্যাব ক্লাস থেকে বাদ না পড়েন আমরা সে বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানাব।
ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা কালবেলাকে বলেন, বিদ্যালয়ের ল্যাবগুলো থেকে সবচেয়ে বেশি ও প্রথম সুবিধা পাওয়ার কথা শিক্ষার্থীদের। তাদের বঞ্চিত করে প্রশিক্ষণ প্রদানের সুযোগ নেই। জেলায় আমি নতুন ও বিষয়টি সবেমাত্র জানলাম। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মন্তব্য করুন