চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদায় আধিপত্য বিস্তারকে ঘিরে বিএনপির দুইগ্রুপের সংঘর্ষে সুলতান (৪৫) নামে এক ওয়ার্ড বিএনপি নেতা নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
নিহত সুলতান নাটুদহ ইউনিয়নের খলিসাগাড়ি গ্রামের মৃত. আফসার আলী ছেলে ও এক নম্বর ওয়ার্ড (গচিয়ার পাড়া-খলিশাপাড়া) বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক।
গত সোমবার মারামারির ঘটনায় সুলতানের ছেলে পলাশ বাদী হয়ে দামুড়হুদা মডেল থানায় পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। এর আগে গত ২৩ অক্টোবর পুলিশিং কমিটি গঠনকে কেন্দ্রে করে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। এতে সুলতানসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়।
গ্রেপ্তারকৃত সোহরাব উদ্দীন (৫৫) নাটুদহ ইউনিয়নের জগনাথপুর গ্রামের গোচিয়ারপাড়ার মৃত ভরস আলীর ছেলে।
জানা গেছে, গত বুধবার (২৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় চন্দ্রবাসে নাটুদহ ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয়ে পুলিশিং কমিটিকে ঘিরে দুপক্ষকে নিয়ে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শামসুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক ওসমানসহ বৃহত্তর নতিপোতা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সহিদুল হক, সহসভাপতি বাশারুল হাবিব বাশার, যুগ্ম-সম্পাদক আজিজুল কল্লা, সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক, ছাত্রদলের ইউনিয়ন সভাপতি জামিউল হাসান, বিএনপি নেতা সুলতান ও সাহাবদ্দীনসহ সবাইকে নিয়ে আলোচনায় বসেন। আলোচনা সভায় বিএনপি নেতা সুলতান ও সাহাবদ্দীন দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়।
এ সময় সুলতান গ্রুপ ও সাহাবদ্দীন গ্রুপের হট্টগোল শুরু হলে পণ্ড হয়ে যায় আলোচনা সভা। পরে সুলতান গ্রুপ দলীয় অফিস থেকে বের হয়ে অবস্থান নেয় গচিয়ারপাড়া মোড়ে। ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ওসমান গণি বিষয়টি নাটুদহ পুলিশ ফাঁড়িতে অবহিত করে। পরে পুলিশের সহায়তায় সাহাবদ্দীন গ্রুপের লোকজন বাড়ি ফেরার চেষ্টা করলে গচিয়ারপাড়া মোড়ে সুলতান গ্রুপের সঙ্গে পুলিশের উপস্থিতিতেই পাল্টাপাল্টি হামলা শুরু হয়।
এতে আহত হন- সুলতানসহ তার গ্রুপের জমির, জমিরের ছেলে হাফিজুল, আজিদের ছেলে সাইফুল ও সুলতানের ছেলে আহত হন। অপরদিকে ভরসের ছেলে সাহাবদ্দীন, সোরাবদ্দী, রেজাউল, আবেদ পন্ডিতের ছেলে আরিফ।
সাহাবদ্দীন গ্রুপের লোকজন মুজিবনগর হাসপাতালে ও সুলতান গ্রুপের লোকজনকে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
সুলতানের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় তার শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার রাতে তিনি মারা যান।
আজ বৃহস্পতিবার মৃত সুলতানের মরদেহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্ত করে দামুড়হুদা উপজেলার নাটুদহ ইউনিয়নের খলিসাগাড়ী গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে স্থানীয় কবরস্থানে জানাজা শেষে দাফন করা হয়।
দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি মো. হুমায়ুন কবির জানান, এই ঘটনায় সোহরাব উদ্দিন নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মন্তব্য করুন