ক্ষমতার অপব্যবহার করে জাল স্লিপের মাধ্যমে গ্রাহকদের সাড়ে তিন কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে প্রিমিয়ার ব্যাংক লিমিটেডের রাজশাহী শাখার আট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) রাজশাহী মহানগর বিশেষ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন দুদকের আইনজীবী বজলে তৌহিদ আল হাসান বাবলা।
চার্জশিটভুক্তরা হলেন- রাজশাহী শাখার সাবেক সিনিয়র ক্যাশ অফিসার ও ক্যাশ ইনচার্জ এফএম শামসুল ইসলাম ওরফে ফয়সাল, ডেপুটি ম্যানেজার (বরখাস্তকৃত) মো. মাজেদুল ইসলাম, সাবেক অফিসার (ক্যাশ) মো. মাহবুবুল আলম, সাবেক অফিসার (ক্যাশ) মো. আতাউর রহমান, সাবেক এসএভিপি (বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত) শাহ মাসুদ জামাল, ট্রেইনি জুনিয়র অফিসার (ক্যাশ) রাকেশ কুমার দত্ত, সিনিয়র এক্সিকিউটিভ অফিসার মোসা. ফাহমিদা উম্মে নাজনীন এবং সাবেক ম্যানেজার ও জোনাল ম্যানেজার (বরখাস্তকৃত) মো. সেলিম রেজা খান।
জানা গেছে, অভিযুক্তরা পারস্পরিক যোগসাজশে প্রতারণা জালিয়াতির মাধ্যমে গত ২০১৭ সালের ২৭ মার্চ থেকে ২০২০ সালের ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত গ্রাহকদের টাকা প্রকৃতপক্ষে তাদের হিসাব নম্বরে টাকা জমা না করেই ভুয়া জমা স্লিপ দেন। গ্রাহকের টাকা জমা দেখিয়ে চেকে জাল স্বাক্ষরের মাধ্যমে আব্দুল্লাহ জুল বাদাইন নামে এক গ্রাহকের হিসাব থেকে ১৬টি চেকের মাধ্যমে ১ কোটি ১৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা ও ফজিলা খাতুনের হিসাব থেকে ১৫টি চেক মূলে ১ কোটি ৪ লাখ ১৫ হাজার টাকাসহ ২ কোটি ২০ লাখ ৫ হাজার টাকা তুলে নেন। এছাড়া আরও ১ কোটি ২৪ লাখ ৯৫ হাজার টাকা বিভিন্ন সময় ভল্ট থেকে সরাসরি গ্রহণ করেন। বিভিন্ন কায়দায় তারা মোট ৩ কোটি ৫৮ লাখ ৯৮ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন।
দুদকের আইনজীবী বজলে তৌহিদ আল হাসান বলেন, দুদক তদন্ত করে ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে। আদালত চার্জশিট গ্রহণ করেছেন। এখন পরবর্তী আইনি কার্যক্রম চলবে।
তিনি বলেন, ২০২০ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি শামসুল ইসলাম ওরফে ফয়সালসহ আটজনের নামে মামলা করে দুদক। এরপর তদন্তকারী কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশনের বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম চার্জশিট দাখিল করেন।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ব্যাংকের ক্যাশ উজাড় করে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে প্রিমিয়ার ব্যাংক রাজশাহী শাখার ক্যাশ ইনচার্জ শামসুল ইসলাম ফয়সালকে আটক করে পুলিশে দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। তখন তিনি নিজের অপরাধ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছিলেন।
মন্তব্য করুন