পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের জরুরি বিভাগ ভবনের সামনে গত কয়েক দিন ধরে বিনা চিকিৎসায় পড়ে থাকা অজ্ঞাত পরিচয় (৫৫) ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের সামনে থেকে ওই অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বিষয়টি জানাজানি হতেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফজলে রাব্বি ও তেঁতুলিয়া মডেল থানার পুলিশ। মৃতের নাম পরিচয় জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।
এ বিষয়ে হাসপাতালে আসা এক রোগীর আত্মীয় মরিয়ম বেগম বলেন, ওই লোকটি ইমারজেন্সি ভবনের সামনে অসুস্থ অবস্থায় পড়ে ছিল। অনেকেই দেখেছেন। কিন্তু কেউ তাকে হাসপাতালে ভর্তি করাননি। আমি রাতে তার কাছে গেলে তিনি পানি খেতে চান। আমি তাকে পানি দিই। আজ সকালে শুনলাম লোকটি মারা গেছেন।
তেঁতুলিয়া মডেল থানার ওসি প্রবীর চন্দ্র সরকার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সকালে টিএইচও ও ইউএনওর মাধ্যমে জানতে পারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক অজ্ঞাত ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করেছে। পরে সেখানে ফোর্স পাঠানো হয়। যেহেতু ব্যক্তির পরিচয় সনাক্ত করা যাচ্ছিল না, সেজন্য আমাদের ক্রাইম সিন টিম ঠাকুরগাঁও সিআইডি টিমের সহায়তায় ব্যক্তিকে সনাক্তকরণের কাজ চালায়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও প প অফিসার ডা. এ এস এম রুহুল আমিন বলেন, সকালে হাসপাতালে চত্বরে একটি বেওয়ারিশ লাশ পাওয়া গেছে। তিনি এখানে পরশুদিন আসেন। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। এমন রোগীর চিকিৎসা দেওয়া আমাদের এখানে সম্ভব ছিল না। রোগীর কোনো অভিভাবক না থাকায় আমরা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি।
তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.ফজলে রাব্বি বলেন, খবর পেয়ে আমরা হাসপাতালে এসেছি। আমাদের উপজেলা স্বাস্থ্য ও প প অফিসার ফোন করেছিলেন। আমরা জানতে পারলাম একটি বেওয়ারিশ লাশ পড়ে আছে। খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি তিরনইহাট ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য গত ৩ দিন আগে ভবঘুরে ব্যক্তিটিকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে রেখে গেছেন। আমাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দুঃখজনক ব্যাপার হলো লাশটা এখানে মাটিতে আমরা পেয়েছি। এটা নিয়ে এলাকার লোকজন আমাকে অনেক অভিযোগ করেছে। আমরা ইতোমধ্যেই মাইকিং করেছি গোটা উপজেলায়। যদি এই ব্যক্তিটির পরিচয় পাওয়া না যায়, তাহলে আমরা বেওয়ারিশ হিসেবে সরকারি যে নিয়ম আছে সেই নিয়মে দাফন করব।
মন্তব্য করুন